চব্বিশের জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণা আগামীকাল (সোমবার) সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)।
এই মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি পরিচালনা করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস.এইচ. তামিম। উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর বি. এম. সুলতান মাহমুদ, শাইখ মাহদি, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ আরও অনেকে।
অন্যদিকে, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন শুনানিতে অংশ নেন। রাজসাক্ষী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
ঐতিহাসিক এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের পিতাসহ স্বজনহারা একাধিক পরিবার। স্টার উইটনেস হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। সর্বমোট ৫৪ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন।
গত ১০ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে। পরবর্তীতে দোষ স্বীকারের মাধ্যমে ঘটনার সত্য উদ্ঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টে ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থান দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, দলীয় ক্যাডার এবং প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অংশ মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যায় জড়িত ছিল—এমন অভিযোগে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একের পর এক আবেদন জমা দেয়। বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অভিযোগের বিচার প্রক্রিয়া চলমান।