
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | ৬ জুন ২০২৫
ঈদুল আজহার প্রাক্কালে লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাতে চালানো এ হামলার খবর নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলার আগে ইসরায়েলি বাহিনী কিছু ভবন খালি করার সতর্কতা জারি করেছিল। এরপর বৈরুতের হাদাথ, হারেত হরেইক ও বোরজ আল-বরাজনেহ এলাকায় একাধিক স্থানে বিস্ফোরণ ঘটে। আকাশে দেখা গেছে ঘন ধোঁয়ার কুণ্ডলী।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) দাবি করেছে, হামলার লক্ষ্য ছিল হিজবুল্লাহর একটি গোপন ইউনিট, যা ভূগর্ভস্থ কেন্দ্রে ‘হাজার হাজার ড্রোন’ উৎপাদন করছিল। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, এই কার্যক্রম ‘ইরানি সন্ত্রাসীদের অর্থায়নে’ পরিচালিত হচ্ছিল।
যদিও গত ছয় মাস ধরে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে একটি কার্যত যুদ্ধবিরতি চলছিল, এ হামলা সেই সমঝোতার বড় ধরনের লঙ্ঘন বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে এ হামলাকে ‘জঘন্য ও ইচ্ছাকৃত’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “এই হামলা আমাদের স্বদেশ, নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও অর্থনীতির বিরুদ্ধে একটি পরিকল্পিত আঘাত—বিশেষ করে যখন ঈদ ও পর্যটন মৌসুম সামনে।”
লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আওন এক বিবৃতিতে বলেন, “এই হামলা আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন। পবিত্র ধর্মীয় উৎসবের আগের রাতে এমন হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
হামলার আগে ইসরায়েলি বাহিনীর আরবি ভাষার মুখপাত্র আভিচাই আদরাঈ সামাজিক মাধ্যমে একটি মানচিত্রসহ পোস্ট করে তিনটি এলাকা—হাদাথ, হারেত হরেইক ও বোরজ আল-বরাজনেহ—এর বাসিন্দাদের দ্রুত এলাকা ত্যাগের আহ্বান জানান।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলা সক্ষমতা তাদের বিরুদ্ধে প্রধান আক্রমণাত্মক অস্ত্রে পরিণত হয়েছে, যা লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করছে।
এ হামলার জেরে বৈরুতে তৈরি হয়েছে ব্যাপক আতঙ্ক। ঈদের আগের রাতে হাজারো মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন, সড়কে সৃষ্টি হয়েছে যানজট।
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এই ঘটনার পর লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেতে পারে। ঈদের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এমন হামলা মধ্যপ্রাচ্যে আরও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পারে বলেও সতর্ক করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।