
আরাফাত, সৌদি আরব – লাখো মুসল্লির কণ্ঠে উচ্চারিত “লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক” ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দান। হজের দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) এখানে জড়ো হয়েছেন বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আগত ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। ইসলামের বিধান অনুযায়ী, এই আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করাকেই হজের মূল অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়।
স্থানীয় সময় ভোরে মিনায় অবস্থান শেষে হাজিরা ফজরের নামাজ আদায় করে আরাফাতের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তারা সেখানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করে হজের খুতবা শোনেন এবং দোয়া ও ইবাদতে সময় কাটান।
চলতি বছরে হজের খুতবা প্রদান করছেন মক্কার মসজিদুল হারামের খতিব শায়খ ড. সালেহ বিন হুমাইদ। খুতবাটি বাংলাসহ মোট ৩৪টি ভাষায় সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে, যাতে মুসল্লিরা নিজ নিজ ভাষায় তা অনুধাবন করতে পারেন।
চরম গরম ও তাপদাহের কারণে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় মুসল্লিদের সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তাঁবুতে অবস্থান করার পরামর্শ দিয়েছে, যাতে তারা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে না পড়েন।
আরাফাতে অবস্থান শেষে হাজিরা সন্ধ্যায় মুজদালিফায় রওনা হবেন। সেখানে রাতযাপন করে জামারায় শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য পাথর সংগ্রহ করবেন।
পরদিন ১০ জিলহজ্ব, ইদুল আজহার দিনে মুসল্লিরা বড় জামারায় শয়তানকে পাথর মারবেন, পশু কোরবানি করবেন এবং মাথা মুণ্ডন করবেন। এরপর কাবা শরীফে তাওয়াফের মাধ্যমে হজের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ সম্পন্ন করবেন।
১১ ও ১২ জিলহজ্ব পর্যন্ত ধারাবাহিক আনুষ্ঠানিকতা পালনের মধ্য দিয়ে প্রায় ১৫ লাখের বেশি মুসলিম পবিত্র হজের সব পর্ব সম্পন্ন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্বের বৃহত্তম বার্ষিক ধর্মীয় সমাবেশ হিসেবে পরিচিত এই হজ পালনে মুসলমানরা একত্রিত হয়ে এক আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন, যা মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, আত্মত্যাগ এবং খোদাভীতির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।