
সিলেটের কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ, মৌলভীবাজারের রাজনগরসহ দেশের একাধিক এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই গুরুতর আকার নিচ্ছে। রোববার (১ জুন) দুপুরে বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, এসব অঞ্চলে নদীর পানি বিপদসীমার উপরে অবস্থান করছে।
এছাড়া বন্যার সতর্কতা জারি করা হয়েছে সিলেট সদর, বিয়ানীবাজার; সুনামগঞ্জের দিরাই; মৌলভীবাজার সদর ও কুলাউড়া; হবিগঞ্জের চুনারুঘাট; নীলফামারীর ডিমলা এবং বাগেরহাটের মংলায়। পরিস্থিতির অবনতি হলে এসব এলাকায় স্বল্পমেয়াদী বন্যা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের শনিবার (৩১ মে) প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের সারিগোয়াইন, যাদুকাটা, ধলাই, সোমেশ্বরী ও মনু নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী দু’দিনের মধ্যে পানি সমতল বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে, ফলে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও মৌলভীবাজারের নদী-সংলগ্ন অঞ্চল প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যার ঝুঁকি
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র আরও জানিয়েছে, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল (বিশেষত সিলেট অঞ্চল) এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল (চট্টগ্রাম অঞ্চল) স্বল্পমেয়াদী বন্যার মুখোমুখি হতে পারে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু নদীতে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করছে বা কাছাকাছি অবস্থান করছে। পরবর্তী ৩-৫ দিনের মধ্যে পাহাড়ি ঢলের কারণে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
নদ-নদীর বর্তমান পরিস্থিতি ও পূর্বাভাস
- সুরমা-কুশিয়ারা অববাহিকা: খোয়াই, মনু, ধলাই নদীর পানি বাড়ছে। দুই দিনের মধ্যে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজারে নিম্নাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা প্রবল।
- ব্রহ্মপুত্র-যমুনা অববাহিকা: এখনো স্থিতিশীল থাকলেও আগামী ৫ দিনে পানি বাড়তে পারে, তবে তা বিপদসীমার নিচে থাকবে।
- তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার: রংপুর অঞ্চলের এই নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি পেতে পারে এবং সতর্কতা সীমা অতিক্রমের সম্ভাবনা রয়েছে।
- চট্টগ্রাম অঞ্চলের নদীগুলো: হালদা, সাঙ্গু, মাতামুহুরী নদীর পানি আগামী ২৪ ঘণ্টায় বাড়বে, তবে দুই দিনের মধ্যে হ্রাস পেতে পারে।
- গঙ্গা-পদ্মা নদী: গঙ্গা নদীর পানি স্থিতিশীল থাকলেও পদ্মার পানি কিছুটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া, পাবনা, ফরিদপুর ও শরীয়তপুরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
উপকূলীয় এলাকায় আপাতত কোনো বন্যা ঝুঁকি নেই
উপকূলীয় নদ-নদীর পানি পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এসব এলাকায় বড় ধরনের বন্যার সম্ভাবনা নেই।
সরকারি প্রস্তুতির আহ্বান
পূর্বাভাস অনুযায়ী পরিস্থিতি আরও অবনতি হলে প্রশাসন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।