
ঢাকা, ১ জুন ২০২৫:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। নির্বাচন কমিশনকে দলটির নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। তবে দলটির পূর্বের প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ বহাল রাখা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন।
রোববার (১ জুন) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। এর ফলে দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন পুনর্বহাল হলো।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় জামায়াতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, “দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে চলা আইনি লড়াইয়ের অবসান ঘটল আজ। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দলের নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। আজকের রায়ের মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথ উন্মুক্ত হলো।”
তিনি আরও জানান, আপিল বিভাগ হাইকোর্টের পূর্বের রায় বাতিল করে নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত দলটির নিবন্ধন ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার সংক্ষিপ্ত আদেশ (শর্ট অর্ডার) আগামীকালের মধ্যে পাওয়ার প্রত্যাশা করছেন তারা, যা কমিশনে জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হবে।
এর আগে, গত ১৪ মে জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পেতে করা আপিলের শুনানি শেষ হয় এবং ১ জুন রায়ের দিন ধার্য করা হয়। শুনানিতে জামায়াতের পক্ষে অংশ নেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট শিশির মনির ও ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন।
রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, নির্বাহী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, মোবারক হোসেনসহ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরের নেতারা।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট এক রায়ে জামায়াতের রাজনৈতিক নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করে। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন প্রজ্ঞাপন জারি করে দলটির নিবন্ধন বাতিল করে দেয়। তবে জামায়াত ২০২3 সালে আপিল বিভাগের কাছে বাতিল হওয়া আপিল পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন করলে আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেন। এরপর শুরু হয় দীর্ঘ আইনি লড়াই, যার সমাপ্তি ঘটল আজকের রায়ের মাধ্যমে।