
ফেনী, ৩০ মে:
ভারতের ত্রিপুরার বিলোনীয়া শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে বাংলাদেশের ফেনী জেলার সীমান্তবর্তী বল্লামুখা এলাকার নোম্যান্সল্যান্ডে ড্রেন নির্মাণের চেষ্টা করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দিবাগত রাতে ওই উদ্যোগ বিজিবি ও স্থানীয়দের বাধার মুখে ব্যর্থ হয়। সীমান্তের বৈদ্যুতিক আলো বন্ধ করে গোপনে কাজ শুরুর পরপরই তা নজরে আসে বাংলাদেশের পক্ষের।
ফেনী-৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন জানান, বিএসএফ বৃষ্টির পানি অপসারণে ড্রেন নির্মাণ করছিল, যার কিছু অংশ নোম্যান্সল্যান্ডের প্রায় ২০ গজ ভেতরে চলে যায়। তিনি বলেন, “শূন্যরেখার ১৫০ গজের মধ্যে কোনো কার্যক্রম চালাতে হলে তা দুই দেশের সম্মতিতে হতে হয়। নিয়ম ভঙ্গ হওয়ায় আমরা বাধা দিয়েছি।”
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ত্রিপুরার বিলোনীয়া শহর ও পুলিশ স্টেশন এলাকায় টানা বর্ষণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের ভাটির দিকে পানি প্রবাহিত করে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করছিল। তবে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা হয় দুই দেশের আনুষ্ঠানিক আলোচনা ছাড়াই।
এদিকে, ফেনীর জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, “আমরা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছি। তবে জনগণকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকার আহ্বান জানাই।”
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-এর যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, “বিএসএফ সীমান্তে লাইট বন্ধ করে স্কেবেটর মোতায়েন করায় সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। বল্লামুখা বাঁধের কোনো ক্ষতি যেন না হয়, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। ভারতীয়রা যাতে জলাবদ্ধতায় না ভোগে, সেটা আমাদেরও কাম্য। তবে তাদের পানি অপসারণের ব্যবস্থা যেন আমাদের পরিবেশ ও নিরাপত্তার ক্ষতি না করে।”
এ ঘটনায় সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতা জারি করেছে বিজিবি। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করা হচ্ছে।