
অভিযোগ গঠনের পর আসামির পক্ষে ‘দোষী’ বা ‘নির্দোষ’— এই দুইয়ের বাইরে কোনো বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরেফিন তাজুল ইসলাম।
রোববার (২ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শুনানি শেষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, “জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ও ১৪ দলীয় জোটের একজন প্রভাবশালী নেতা হিসেবে হাসানুল হক ইনু বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন দমন, কারফিউ জারি ও দেখামাত্র গুলি চালানোর মতো নানা পরিকল্পনায় নেতৃত্ব ও নির্দেশনা দিয়েছেন। তার উসকানিমূলক বক্তব্যে ছাত্রদের ‘সন্ত্রাসী’ বা ‘জামায়াত-শিবির’ আখ্যা দিয়ে তাদের ওপর সহিংসতা চালানো বৈধ— এমন ধারণা তৈরি হয়েছিল।”
তিনি আরও জানান, “বিগত সময়ে ইনু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে ড্রোন, হেলিকপ্টার ও বোমা হামলার মাধ্যমে ছাত্র জনতাকে হত্যার বিষয়ে আলোচনা করেছেন এবং তাতে সম্মতি জানিয়েছেন। এছাড়া আটককৃতদের কোর্ট বা জেলে না পাঠিয়ে কীভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে সম্পর্কেও পরামর্শ দিয়েছেন।”
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের এসব কর্মকাণ্ডের ভিত্তিতে হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে মোট ৮টি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৩০ নভেম্বর।
এছাড়া, একই ধরনের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুল আলম হানিফসহ কুষ্টিয়া আওয়ামী লীগের আরও তিনজন নেতার বিরুদ্ধেও অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। ওই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ২৫ নভেম্বর।
দোষ স্বীকার বা অস্বীকারের বিষয়ে প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, “আইন অনুযায়ী অভিযোগ গঠনের পর আসামিকে জিজ্ঞাসা করা হয় তিনি দোষী না নির্দোষ। যদি তিনি দোষী স্বীকার করেন, আদালত সেই ভিত্তিতে রায় দিতে পারেন। আর যদি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন, তাহলে মামলা বিচার পর্যায়ে যাবে। এই প্রক্রিয়ায় আসামি শুধু ‘দোষী’ বা ‘নির্দোষ’— এ দুটির মধ্যেই একটি বক্তব্য দিতে পারেন; এর বাইরে কোনো বক্তব্য আদালতের আমলে নেওয়ার সুযোগ নেই।”