
পটুয়াখালীতে জুলাই অভ্যুত্থানের এক শহীদের কন্যা লামিয়াকে (১৭) ধর্ষণ ও পরবর্তীতে তার আত্মহত্যায় প্ররোচনার ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণা করেন। বুধবার (২২ অক্টোবর) বেলা সোয়া ১১ টার দিকে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিজ্ঞ বিচারক নিলুফার শিরিন এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে মামলার আসামি সাকিব, সিফাত ও ইমরানকে ১০ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং সাকিব ও ইমরানকে পর্নগ্রাফি আইনের ধারায় আরও ৩ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
মামলায় রায় পরবর্তী সময়ে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আল নোমান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৮ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দুমকি উপজেলাতে জুলাই আন্দোলনে শহীদ পিতার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়িতে ফেরার পথে ভুক্তভোগীকে (১৭) তুলে নিয়ে যায় আসামিরা। পরে উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের আলগি গ্রামের জলিল মুন্সীর বাড়ির পাশে নির্জন বাগানে নিয়ে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণের সময় আসামিরা তার নগ্ন ভিডিও ধারণ করে, তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে চুপ থাকতে বলে।
পরদিন ১৯ মার্চ ভুক্তভোগী (১৭) নিজেই দুমকী থানায় মামলা দায়ের করেন। একই গ্রামের সাকিব মুন্সী (১৭), সিফাত মুন্সী (১৭) ও ইমরান মুন্সী (১৭) নামের তিন কিশোরকে মামলায় আসামি করা হয়।
পরে ভুক্তভোগী তার নানুর সাথে ঢাকায় চলে যান।এরপর গত ২৬ এপ্রিল রাজধানীর শেখেরটেক এলাকার ভাড়া বাসা থেকে ভুক্তভোগীকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও পারিবারিক তথ্য মতে, মানসিক চাপ ও হতাশার কারণে ভুক্তভোগী আত্মহত্যা করেন। পরদিন রাতে বাবার কবরের পাশে লামিয়াকে দাফন করা হয়।
পুলিশ জানায়, মামলার তদন্তে আসামিদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিশ্চিত পাওয়া গিয়েছে। তদন্ত শেষে গত ৬ মে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এরপর ১৬জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গত ১৯ অক্টোবর দুপুরে মামলার উভয় পক্ষের আইনজীবীর সমাপনী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। সেদিনই বিচারক রায় ঘোষণার জন্য আজকের তারিখ নির্ধারণ করেন।