
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন নতুন সংবিধান প্রণয়নের অংশ হিসেবে প্রস্তাবিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এর খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছে। শনিবার (১৬ আগস্ট) দলগুলোর কাছে পাঠানো এ খসড়ায় পটভূমি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড এবং ২০১৮ সালের কোটা আন্দোলনের ঘটনা। খসড়ার চূড়ান্ত প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এই সনদের বিধান, প্রস্তাব ও সুপারিশ সাংবিধানিক ও আইনগতভাবে বলবৎ হিসেবে গণ্য হবে এবং এর বৈধতা কিংবা কর্তৃত্ব নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না। কমিশনের দাবি, এটি জনগণের দীর্ঘদিনের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম ও ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের চূড়ান্ত ফসল।
খসড়ায় মোট আট দফা অঙ্গীকারনামা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, জনগণের অভিপ্রায়ই হবে সর্বোচ্চ আইন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মিলিত সিদ্ধান্তে প্রণীত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এর সব বিধান সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সংবিধান, বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কারের সুপারিশ এতে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক গুরুত্ব সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদানের কথাও এতে উল্লেখ রয়েছে। খসড়ায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, এ সনদের যেসব প্রস্তাব অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য, সেগুলো কোনো ধরনের কালক্ষেপণ ছাড়াই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাস্তবায়ন করতে হবে।
এছাড়া সনদে গণঅভ্যুত্থানকালে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করা, শহিদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান, শহিদ পরিবারের সহায়তা এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের অঙ্গীকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, এ সনদের যেকোনো ব্যাখ্যা সংক্রান্ত চূড়ান্ত এখতিয়ার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের উপর ন্যস্ত করার প্রস্তাবও রাখা হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দাবি, এই খসড়ার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক যাত্রা নতুন রূপে পুনর্গঠিত হবে এবং জনগণের অভিপ্রায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে।