
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘জাতির পিতা’ উপাধি কোনো ঐতিহাসিক সত্য নয়, বরং আওয়ামী লীগের তৈরি এক ফ্যাসিবাদী হাতিয়ার। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে তিনি অভিযোগ করেন, স্বাধীনতা অর্জনে শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা ও ত্যাগ স্বীকার করলেও তার শাসনামলে সংঘটিত জাতীয় বিপর্যয়গুলোর কথা উপেক্ষা করা যায় না। তিনি দাবি করেন, মুজিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ভারতের উপনিবেশিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়, জনগণ-বিরোধী সংবিধান চাপিয়ে দেওয়া হয় এবং রাজনৈতিক হত্যা ও একদলীয় স্বৈরশাসনের ভিত্তি রচিত হয়।
তার পোস্টে নাহিদ ইসলাম আরও উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী রাজনীতির মূল কেন্দ্রে রয়েছে মুজিব পূজা ও মুক্তিযুদ্ধ পূজা—যা রাজনৈতিক মূর্তিপূজার রূপ নিয়ে জনগণকে বিভক্ত ও দমন করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। তিনি বলেন, দশকের পর দশক ধরে দলটি বাংলাদেশকে বংশগত সম্পত্তি মনে করে শাসন করেছে এবং মুজিবের নাম ব্যবহার করে দুর্নীতি ও দমনকে ন্যায্যতা দিয়েছে। তার ভাষ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান এই ‘জমিদারি’ ভেঙে দিয়েছে, এবং ভবিষ্যতে কোনো ব্যক্তি, পরিবার বা মতবাদ আর জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে পারবে না।
নাহিদ ইসলাম ‘মুজিববাদ’-কে শেখ মুজিব ও মুক্তিযুদ্ধের নামে পরিচালিত এক ফ্যাসিবাদী মতবাদ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, এটি গুম, হত্যা, ধর্ষণ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, জাতীয় সম্পদ লুটপাট, ইসলামভীতি ও সংখ্যালঘু ভূমি দখলের প্রতীক। তার দাবি, ষোলো বছর ধরে মুজিবকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে জীবিত রাখা হয়েছে এবং মূর্তির আড়ালে অপহরণ, খুন, লুটপাট ও গণহত্যা চালানো হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, মুজিববাদ আজও এক জীবন্ত বিপদ এবং এটি পরাজিত করতে রাজনৈতিক, আদর্শিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তার আহ্বান, একটি স্বাধীন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়া, যেখানে কোনো দল, বংশ বা নেতা জনগণের ঊর্ধ্বে নয়।