
প্রবাসী বাংলাদেশিদের দীর্ঘদিনের দাবি এবার বাস্তবায়নের পথে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো বিদেশে থাকা ভোটাররা প্রতীক সম্বলিত পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার আগে প্রতীকসহ ব্যালট পেপার পাঠানো হবে প্রবাসীদের কাছে, যেখানে নিবন্ধিত দলগুলোর সংরক্ষিত প্রতীকের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ১০টি প্রতীকও থাকবে। পুরো প্রক্রিয়াটি ডাক বিভাগের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে এবং ভোট দিতে ইচ্ছুক প্রবাসীদের জন্য তিন সপ্তাহের নিবন্ধন সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দের পর ডাকযোগে ভোট পাঠানো যাবে, তবে কোনো দল প্রার্থী না দিলেও সেই প্রতীক ব্যালটে থাকায় বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
নির্বাচন বিশ্লেষক বদিউল আলম মজুমদার মনে করেন, বহুবছর ধরে আলোচনায় থাকলেও প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হয়নি। এবার প্রধান উপদেষ্টার অগ্রাধিকার তালিকায় বিষয়টি স্থান পেয়েছে। তবে পোস্টাল ব্যালট নিয়ে মানুষের সন্দেহ অমূলক নয়, কারচুপি ঠেকাতে নির্বাচন কমিশনকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যদিকে নির্বাচন বিশেষজ্ঞ জেসমিন টুলি প্রস্তাব দিয়েছেন, প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে মনোনয়ন চূড়ান্ত ও প্রতীক বরাদ্দের পর ভোটগ্রহণের সময় কমপক্ষে ৩০ দিন নির্ধারণ করা উচিত, যাতে ব্যালট যথাসময়ে পৌঁছায় ও ফেরত আসে। তিনি সতর্ক করেছেন, রিটার্নিং অফিসারের প্রভাব থাকলে ব্যালটের সময়সীমায় কারসাজি হতে পারে, যদিও এবারের নির্বাচনে তেমন ফাঁকফোকর থাকার কথা নয়।
প্রথমবারের মতো প্রবাসী ভোটে প্রাণ ফেরাতে এই উদ্যোগের গুরুত্ব অপরিসীম হলেও তা কতটা সফল হবে তা নির্ভর করছে সুষ্ঠু প্রক্রিয়া, নিরাপত্তা ও সময়মতো ভোট ফেরতের ওপর। অতীতের অভিজ্ঞতা বদলে এ উদ্যোগ সত্যিই প্রবাসীদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে পারবে কি না, তার উত্তর মিলবে ব্যালট ফেরত আসার পরই।