
ঢাকায় আন্দোলনের পরবর্তীতে আলোচনায় আসা নামগুলোর পরিচিতি ও সমন্বয়ের বাস্তবতা নিয়ে এবার মুখ খুললেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামের অন্যতম সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে একটি দীর্ঘ পোস্টে রাফি সরাসরি লিখেছেন, ঢাকায় এসে বঙ্গভবনে যাওয়ার দিন প্রথমবারের মতো মাহফুজ ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়েছিল তার। ফেসবুক পোস্টে চট্টগ্রামের আন্দোলনের শুরু, ঢাকা কেন্দ্রীক সমন্বয়ের বিচ্ছিন্নতা, শিবির-বাম-ডান সবার অংশগ্রহণ, ছাত্রলীগের হামলা, নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের অজ্ঞতা, এবং ডিবি হেফাজতের বাইরের আন্দোলনের চালক শক্তির কথা উল্লেখ করেন রাফি।
পোস্টে রাফি তুলে ধরেন, কীভাবে চট্টগ্রামে আন্দোলন শুরু হয় এবং সেখানে ব্যক্তিগত পরিচয় না থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন দলের মানুষ একত্রে যুক্ত হন। ৩ জুলাই ১ নম্বর গেট অবরোধের সময় ছাত্রলীগের হাতে আটকের কথা বলার পাশাপাশি নিজের নেতৃত্বাধীন টেলিগ্রাম গ্রুপ, কেন্দ্র থেকে আলাদা সিদ্ধান্ত, নাম কাটা-বদল, ছাত্রলীগের হামলার শিকার হওয়া এবং ঢাকার “২/৩ মুখ”–কে অতি উচ্চস্থানে তুলে ধরার প্রবণতা নিয়েও সরাসরি অভিযোগ তোলেন তিনি। রাফির ভাষায়, “ঢাকার নির্দেশের অপেক্ষায় আমরা ছিলাম না।” এছাড়াও তিনি বলেন, “আমরা যারা বাইরের জেলায় থেকেছি, তারা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়েই আন্দোলন চালিয়ে গেছি।”
রাফি আরও বলেন, ৬ আগস্ট হঠাৎ তাকে ফোন করে কার্জন হলে ডাকা হয়, যেখানে তিনি না জেনেই বঙ্গভবনে যেতে রাজি হন এবং সেখানেই প্রথমবারের মতো পরিচয় হয় ‘মাহফুজ ভাই’-এর সঙ্গে। “এর আগে কখনো তাকে দেখিনি, চিনিও না, কথাও হয়নি,”—এমন মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি পরোক্ষভাবে অনেকে যাদের আন্দোলনের নেতৃত্বে তুলে ধরা হচ্ছে, তাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ, চ্যানেল ২৪ এর সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণ, ঢাবিকেন্দ্রিক অগ্রাধিকার ইত্যাদি বিষয়েও রাফি তার অবস্থান পরিষ্কার করেন। শেষ পর্যন্ত তিনি লেখেন, “প্লাস-মাইনাস আরও অনেক কিছুই হয়েছে, ধীরে ধীরে সব লেখা হবে।”
এই পোস্ট সামাজিক মাধ্যমে দারুণ সাড়া ফেলেছে এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ‘আসল চালকদের’ বিষয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।