
বৈষম্যবিরোধী জুলাই আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ীতে কিশোর আব্দুল কাইয়ুম আহাদ হত্যাকাণ্ডের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাতে শুনানি শেষে এই আদেশ দেন বিচারক। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ পরিদর্শক খালেদ হাসান তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। মামলায় কোনো রিমান্ড বা জামিন আবেদন ছিল না।
আদালতে হাজিরের সময় খায়রুল হককে ঘিরে ছিল পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা। এর আগে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির নিজ বাসা থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাকে গ্রেফতার করে।
মামলার নথি অনুযায়ী, ১৮ জুলাই যাত্রাবাড়ীর কাজলা পুলিশ বক্সের সামনে গুলিবিদ্ধ হন ১৬ বছর বয়সী কিশোর আহাদ। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, যাত্রাবাড়ী থানার ওসি আবুল হাসান তার দুই পায়ে ব্রাশ ফায়ার করলে ঘটনাস্থলেই আহাদের মৃত্যু হয়। নিহতের বাবা আলা উদ্দিন একই বছরের ৬ জুলাই ৪৬৭ জনকে এজাহারনামীয় আসামি এবং ১-২ হাজার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন।
সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের আইন কমিশনের চেয়ারম্যান। ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এবং ২০১১ সালের ১৭ মে অবসর গ্রহণ করেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়দাতা হিসেবে তিনি রাজনৈতিকভাবে ব্যাপক সমালোচিত ছিলেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর খায়রুল হক ১৩ আগস্ট আইন কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন। রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই গ্রেফতার ও কারাগারে প্রেরণ দেশের বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ নজির হয়ে থাকছে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।