উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তে নিহত বেড়ে ২০, চিকিৎসাধীন ১৭১

রাজধানীর উত্তরা এলাকায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ২০ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১৭১ জন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ও কর্মী। সোমবার (২১ জুলাই) রাতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি কমাতে পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বিমানটিকে জনবহুল এলাকা এড়িয়ে চালানোর চেষ্টা করেন, তবে দুর্ভাগ্যবশত তা উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় স্কুল ভবনের ওপর আছড়ে পড়ে।

আইএসপিআর জানায়, দুর্ঘটনায় জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ৭০ জন ভর্তি, নিহত ২; সিএমএইচে ১৭ জন আহত, নিহত ১২; উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে ৬০ জন আহত, ১ জন নিহত; কুর্মিটোলা ও লুবনা জেনারেল হাসপাতালে আরও কয়েকজন নিহত হন। ঢাকা মেডিকেলে আহত ৩ জন ও নিহত ১ জন এবং কুয়েত মৈত্রী ও ক্রিসেন্ট হাসপাতালেও কয়েকজন আহত চিকিৎসাধীন। সর্বমোট ৮টি হাসপাতালে ১৭১ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। আহতদের মধ্যে অনেকেই গুরুতর দগ্ধ এবং আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। মৃতদের মধ্যে এখনও ৭ জনের পরিচয় মেলেনি

ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বিজিবি’র সমন্বয়ে গঠিত উদ্ধার টিম প্রাথমিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং পরে ভিকটিমদের উদ্ধার করে হেলিকপ্টারে করে বিভিন্ন হাসপাতালে প্রেরণ করে। দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর রেকর্ড অফিসে একটি জরুরি সেল চালু করা হয়েছে, রক্তদাতাসহ যেকোনো সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর: ০১৭৬৯৯৯৩৫৫৮

এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “এটা জাতির জন্য এক অসহনীয় ক্ষতি। আমরা নিহতদের পরিবারের সামনে নিরুত্তর।” সরকার মঙ্গলবার (২২ জুলাই) একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে, যেখানে সব সরকারি, বেসরকারি ও বিদেশি মিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থতার জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *