
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজের আকাশে দুপুরের নীরবতা হঠাৎই ভেঙে দেয় এক ভয়াবহ বিস্ফোরণ। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান সরাসরি বিদ্যালয়ের একটি ভবনে আছড়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায় গোটা স্থাপনায়। সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে সংঘটিত এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর চারদিকজুড়ে শুরু হয় হাহাকার, আতঙ্ক আর কান্নার ধ্বনি। ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট, সেনাবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর সদস্যরা তাৎক্ষণিক উদ্ধারকাজে অংশ নেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে, যাদের মধ্যে স্কুলের শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক, কর্মচারী ও বিমানটির পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির রয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৬৪ জন। অনেকেই দগ্ধ অবস্থায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট, ঢাকা মেডিকেল, সিএমএইচ, কুর্মিটোলা ও উত্তরা এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে। সরেজমিনে দেখা যায়, আগুন লাগার পরপরই শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করতে গিয়ে কয়েকজন অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দাও আহত হয়েছেন। অল্প সময়ের মধ্যে গোটা ক্যাম্পাস পরিণত হয় যুদ্ধক্ষেত্রে।
দুপুর ২টা ২৫ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া বিমানটির বিভিন্ন অংশ উদ্ধার করতে ব্যবহার করা হয় ভারী যন্ত্রপাতি ও ক্রেন। পর্যায়ক্রমে বিমানের ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে নেওয়া হয় এবং সন্ধ্যার পর অভিযান সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। এখন পর্যন্ত অনেক হতাহতদের পরিচয় প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই দুর্ঘটনা শুধু এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, পুরো জাতিকেই কাঁদিয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামরিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় আরও সতর্কতা ও জবাবদিহির দাবি উঠেছে সব মহল থেকে।
Ask ChatGPT