
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্রভাবে আক্রমণ করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না করে তিনি ইঙ্গিত করলেন, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী-এমপি ও নেতারা ভারত সরকারের মদদে কলকাতায় আশ্রয় পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) নিউটাউনের এক সরকারি অনুষ্ঠানে ‘বাংলাভাষীদের হেনস্তা’ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মমতা বলেন:
“বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি? তাহলে ভারত সরকার যেসব অতিথিকে কলকাতায় রেখে দিয়েছে, তাদের রাখা নিয়ে আমি কি কোনোদিন আপত্তি করেছি? করিনি। কারণ ওটা রাজনৈতিক বিষয়।”
🔹 মোদি সরকারের উদ্দেশে সোজাসাপ্টা প্রশ্ন
মমতা মোদি সরকারের উদ্দেশে বলেন:
“যদি বাংলাদেশিদের নিয়ে এত সমস্যা হয়, তাহলে কিছু বাংলাদেশিকে কেন অতিথি করে রাখা হয়েছে? তাদের রাখা নিয়ে এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকার কোনও প্রশ্ন তোলে না। কিন্তু আপনারা বাংলাভাষীদের নির্বাসনের হুমকি দিচ্ছেন! অন্য রাজ্যে বাংলায় কথা বললেই রোহিঙ্গা বলে অপমান করা হচ্ছে।”
🔹 ১৯৭১ চুক্তি ও উদ্বাস্তুর প্রসঙ্গ
মমতা আরও বলেন,
“১৯৭১ সালে ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির মাধ্যমে যারা এসেছেন, তারা কেউ বাংলাদেশি নন — তারা ভারতের নাগরিক। এদের নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচার চালিয়ে নাগরিকদের হেনস্তা করা হচ্ছে।”
🔹 রাজনৈতিক ব্যাখ্যা
তার বক্তব্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে যে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের একাংশ নেতাকে ভারত, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে, ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ দিয়েছে — আর সেখান থেকেই তিনি মোদি সরকারের ‘দ্বৈত নীতির’ বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন।
প্রেক্ষাপট:
বর্তমান সময়ে ভারতে নাগরিকত্ব ও অভিবাসন ইস্যুতে জাতীয় রাজনীতিতে উত্তেজনা তুঙ্গে। এনআরসি, সিএএ নিয়ে একাধিকবার রাজ্য-কেন্দ্রের মধ্যে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে মমতার এমন বক্তব্য নতুন করে বাংলাদেশ-ভারত রাজনৈতিক সম্পর্কেও দৃষ্টি টেনেছে।