রংপুরে ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ডের কাছে মিললো অবৈধ অস্ত্র

রংপুরে এক চাঞ্চল্যকর অভিযানে তিনটি ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মীর কাছ থেকে অবৈধ অস্ত্র, গুলি ও ভুয়া লাইসেন্স উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতভর অভিযান চালিয়ে এদের মধ্যে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, একজন পলাতক। কোতোয়ালী থানা সূত্র জানায়, এ ঘটনায় তিনটি পৃথক মামলা করা হয়েছে। অভিযানে উঠে আসে, ওই নিরাপত্তাকর্মীরা ভুয়া লাইসেন্স ও অবৈধ অস্ত্র কিনে দীর্ঘদিন ধরে নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত ছিলেন। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোও সেগুলো যাচাই না করেই তাদেরকে অস্ত্রসহ নিয়োগ দিয়েছে।

পুলিশ জানায়, জাহাজ কোম্পানি মোড়ে অবস্থিত মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে দায়িত্বরত এলিট সিকিউরিটি ফোর্সের গার্ড শাহাদাত হোসেনের (২৬) কাছ থেকে একটি অবৈধ দোনলা বন্দুক, ৫ রাউন্ড গুলি ও ভূয়া লাইসেন্স উদ্ধার করা হয়। পরে মাজেদা কমপ্লেক্সের যমুনা ব্যাংকে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় একই প্রতিষ্ঠানের জহুরুল হককে (২৭), তার কাছেও ছিল একনলা বন্দুক ও একই ধরনের নকল কাগজপত্র। এছাড়া, দেওয়ানবাড়ি রোডে অবস্থিত ডাক বাংলা ব্যাংকে কর্মরত বিগ সিকিউরিটি সার্ভিসের মোশফেকুর রহমানের (৪১) কাছ থেকে একই ধরনের অস্ত্র উদ্ধার হলেও, অভিযানের সময় তিনি পালিয়ে যান। তারা সবাই রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা।

তদন্তে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃতদের একজন পালাতক মোশফেকুর রহমানের মাধ্যমে অবৈধ অস্ত্র ও লাইসেন্স সংগ্রহে সাহায্য করেন। সাড়ে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে তারা এই অস্ত্র সংগ্রহ করে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকে নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত ছিলেন। পুলিশ জানায়, ব্যাংকগুলো নিয়োগের সময় যথাযথ যাচাই-বাছাই না করে দায়িত্বে অবহেলা করেছে। রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী বলেন, “এটি একটি ভয়ানক উদাহরণ। শুধু নিরাপত্তা কোম্পানি নয়, দায় এড়াতে পারে না ব্যাংক কর্তৃপক্ষও।” তবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক এবং সিকিউরিটি কোম্পানির প্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা কোনো মন্তব্যে সাড়া দেননি। এই ঘটনায় ব্যাংক নিরাপত্তা ব্যবস্থার ভেতরকার অসঙ্গতি আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *