
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে হৃদয়বিদারক এক ঘটনায় দুই জমজ কন্যাশিশুকে পুকুরে ফেলে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন তাদের মা শান্তা বেগম। বুধবার (৯ জুলাই) বিকেলে জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে শান্তা জানান, পারিবারিক কলহের কারণেই তিনি সন্তানদের পানিতে ফেলে দেন। আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশিকুর রহমান তার স্বীকারোক্তি গ্রহণ করেন এবং তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
শান্তার পারিবারিক ইতিহাস ঘেঁটে জানা গেছে, দুই বছর আগে বিবন্দী গ্রামের দিনমজুর সোহাগ শেখের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। তাদের সংসার শুরু হলেও পাঁচ মাস আগে শান্তা যমজ কন্যা সন্তানের জন্ম দেন—যা স্বামী সোহাগ ভালোভাবে মেনে নিতে পারেননি। সন্তানদের জন্মের পর থেকেই পারিবারিক অশান্তি প্রকট আকার ধারণ করে। একপর্যায়ে শান্তা সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকলেও সম্প্রতি তিনি স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসেন। সোমবার রাত ৮টার দিকে হঠাৎ চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে জানতে পারেন—দুই শিশু লামিয়া ও সামিহাকে বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা দ্রুত পুকুরে নেমে শিশুদের উদ্ধার করে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান, কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু দুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। শ্রীনগর থানা পুলিশ এরপর সোহাগ শেখ ও শান্তা বেগম—উভয়কেই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। তবে তদন্তের একপর্যায়ে শান্তা পুরো ঘটনার দায় নিজের কাঁধে নেন এবং আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। দুই নিষ্পাপ শিশুর এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।