
গাজার অবরুদ্ধ এলাকায় খাদ্যের সন্ধানে গিয়ে একের পর এক প্রাণ হারাচ্ছেন নিরীহ ফিলিস্তিনিরা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে গাজা জুড়ে ৭০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত বিতরণ কেন্দ্রে খাবার নিতে গিয়ে ৭৪৩ জন নিহত এবং ৪,৮৯১ জনের বেশি আহত হয়েছেন। মানবিক ত্রাণের আড়ালে এই মৃত্যুপুরী অভিযানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক নিন্দা শুরু হয়েছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদক হানি মাহমুদ গাজা সিটি থেকে জানান, খাদ্যের জন্য অপেক্ষমাণ মানুষের ওপর হামলার পরিসংখ্যান আরও ভয়াবহ হতে পারে। “মানুষ ক্ষুধার্ত। মা নিজে না খেয়ে সন্তানকে খাওয়াচ্ছেন। পরিবারগুলো দিন পার করছে আধা প্যাকেট খাবার দিয়ে,” বলেন মাহমুদ। তীব্র খাদ্য সংকটে মানুষ মরিয়া হয়ে সাহায্যের জন্য ভিড় করছে বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে, যেখানে বারবারই হামলা চলছে ইসরায়েলি বাহিনী বা তাদের ঠিকাদারদের হাতে। একাধিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে মার্কিন ঠিকাদারদের গুলি চালানোর অভিযোগও, যদিও জিএইচএফ সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে ‘সতর্কতা’র দাবি করেছে।
এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন জিএইচএফ-এর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, যাদেরকে গাজায় ‘খাদ্য পৌঁছে দেওয়া একমাত্র সংস্থা’ বলে উল্লেখ করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। জুনের শেষে যুক্তরাষ্ট্র জিএইচএফ-কে ৩০ মিলিয়ন ডলারের তহবিল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এই সংস্থার মাধ্যমে ২০ লক্ষ মানুষকে প্রতিদিন মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই প্রকল্পকে বলেছে—“অমানবিক ও প্রাণঘাতী সশস্ত্র পরিকল্পনা”। সর্বশেষ শনিবার খান ইউনিসের এক বিতরণ কেন্দ্রে গ্রেনেড হামলায় দুই মার্কিন কর্মী আহত হয়েছেন বলেও নিশ্চিত করেছে জিএইচএফ।