
দেশবরেণ্য প্রশাসক ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ এ টি এম শামসুল হুদা আর নেই। শনিবার (৫ জুলাই) সকালে গুলশানের নিজ বাসভবন থেকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তার মৃত্যুতে দেশের প্রশাসনিক ও নির্বাচন ব্যবস্থার এক উজ্জ্বল অধ্যায়ের অবসান হলো। বর্তমানে তার মরদেহ ইউনাইটেড হাসপাতালেই রাখা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে থাকা তার মেয়ে দেশে ফেরার পর জানাজার সময় ও স্থান নির্ধারিত হবে।
১৯৪৩ সালের ১০ জুলাই জন্ম নেওয়া শামসুল হুদা ছিলেন একাধারে সফল প্রশাসক ও দূরদর্শী নীতিনির্ধারক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন তিনি। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন—বাগেরহাটের মহকুমা প্রশাসক, কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের এমডি, পানি সম্পদ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বহু দায়িত্ব তিনি সাফল্যের সঙ্গে পালন করেন। অবসর নেন ২০০০ সালে।
২০০৭ সালে এক-এগারোর রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে শামসুল হুদা প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনে আনা হয় যুগান্তকারী সংস্কার—ছবিসহ ভোটার তালিকা ও স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স চালুর মতো উদ্যোগ। তার কমিশনের অধীনেই ২০০৮ সালের নবম জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যা তৎকালীন রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে বড় ভূমিকা রাখে। তার সততা, দক্ষতা ও প্রজ্ঞা আজও দেশের প্রশাসন ও নির্বাচন ব্যবস্থার জন্য অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে রয়েছে।