
পাত্র নয়, আসল হারাম হচ্ছে মাদকদ্রব্য—হাদিসে স্পষ্ট ব্যাখ্যা
ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে মদ সম্পূর্ণরূপে হারাম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা মদকে “শয়তানের কাজ” আখ্যায়িত করে তা বর্জনের নির্দেশ দিয়েছেন। সূরা মায়েদায় ইরশাদ হয়েছে—“হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া, মূর্তিপূজা ও ভাগ্য নির্ধারণের তীর তো শয়তানের কাজ, এগুলো পরিহার করো যাতে তোমরা সফল হতে পারো।” (মায়েদা ৯০)। এ ছাড়া রাসুল (সা.) অসংখ্য হাদিসে মদকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন, যেমন—“প্রত্যেক নেশাদ্রব্যই মদ, আর সব মদই হারাম।” (মুসলিম: ৩৬৩৮)। তিনি আরও বলেছেন—“মদ পানকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” (ইবনে মাজাহ: ৩৩৭৬)
তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন প্রায়ই উঠতে দেখা যায়—মদের বোতলে যদি ভালোভাবে ধুয়ে পানি রাখা হয়, তা কি পান করা বৈধ? ইসলামী স্কলারদের মতে, যদি বোতলটি ভালোভাবে ধৌত করা হয় এবং মদের কোনো চিহ্ন না থাকে, তবে তাতে রাখা পানি পান করায় বাধা নেই। ইসলামের প্রাথমিক যুগে মদের বোতল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা ছিল মূলত তিনটি কারণে—১) মদের অবশিষ্ট চিহ্ন, ২) স্মৃতি জাগানো, ও ৩) মদের প্রতি ঘৃণা তৈরি করা। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই নিষেধাজ্ঞা হালকাভাবে তুলে নেওয়া হয়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেই এক হাদিসে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন। হজরত বুরাইদা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেন, “আমি তোমাদের কিছু পাত্র ব্যবহারে নিষেধ করেছিলাম। আসলে কোনো পাত্র কোনো কিছুকে হারাম বা হালাল করে না। তবে প্রতিটি নেশাদ্রব্যই হারাম।” (সহিহ মুসলিম: ৫৩২৬; তিরমিজি: ১৮৬৯)। অর্থাৎ মদের বোতল ব্যবহার যদি মদের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখে, তবে সেটি স্বয়ং হারাম নয়। তবে সতর্কতা ও সচেতনতা সবসময়ই কাম্য, যেন কোনোভাবে হারামের প্রতি অনিচ্ছাকৃত পক্ষপাত না ঘটে।