গুমে জড়িত সেনাসদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত: জঙ্গি দমনে বড় সাফল্য সেনাবাহিনীর

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যেসব সদস্য প্রেষণে (ডেপুটেশনে) থেকে গুমের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে সেনাসদর। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে সেনা সদরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সামরিক অপারেশনস পরিদপ্তরের কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, “অভিযোগে যেসব সেনাসদস্যের নাম এসেছে, তদন্তে যদি প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরও জানান, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে হেনস্তার ঘটনায় অভিযুক্ত ছয়জনের একজনকে সেনাবাহিনী গ্রেফতার করে আদালতে হস্তান্তর করেছিল। সেনাবাহিনী ভবিষ্যতেও মব ভায়োলেন্স ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী কর্মকাণ্ডে কঠোর অবস্থানে থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রতিক নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান সম্পর্কেও বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। কর্নেল শফিকুল জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) বিরোধী অভিযানে দুজন সশস্ত্র সদস্য নিহত হয়েছে। এর মধ্যে একজন ‘মেজর’ পদমর্যাদার কমান্ডার। এ অভিযানে তিনটি এসএমজি, একটি চায়নিজ রাইফেল, ৩৬৪ রাউন্ড গুলি ও সামরিক সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।

এছাড়া, গত দুই সপ্তাহে সারাদেশে ২৬টি অবৈধ অস্ত্র ও ১০০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৬৯২টি অস্ত্র এবং ২ লাখ ৮৬ হাজার ৮৫৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। গ্রেফতার হয়েছে ১৫ হাজার ৬৪৬ অপরাধী, যাদের মধ্যে কিশোর গ্যাং ও ডাকাতও রয়েছে। মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে ৫ হাজার ৫২১ জন।

ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, সেনা অভিযানের ফলে বান্দরবানে কেএনএফের ভয়ে ঘরছাড়া হওয়া ১৩৮ জন বম উপজাতি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে। তাদের সর্বাত্মক সহায়তা দিচ্ছে সেনাবাহিনী।

জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে কর্নেল শফিকুল বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা পাওয়া মাত্র সেনাবাহিনী অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে সর্বোচ্চ সহায়তা দেবে।”

সংক্ষেপে মূল বার্তাসমূহ:

  • গুমের অভিযোগে অভিযুক্ত সেনাসদস্যদের তদন্ত চলমান
  • কেএনএফের বিরুদ্ধে অভিযানে ২ সদস্য নিহত, অস্ত্র-গুলিসহ সামরিক সরঞ্জাম উদ্ধার
  • ১৫ হাজারের বেশি অপরাধী গ্রেফতার, বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ
  • জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি পুরোপুরি রয়েছে

প্রতিকূলতার মধ্যেও দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সেনাবাহিনীর এমন ভূমিকাকে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *