নির্যাতনের সংস্কৃতি বন্ধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অন্তর্বর্তী সরকার: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস

ঢাকা, ২৫ জুন:
আন্তর্জাতিক নির্যাতিতদের সহমর্মিতা দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অতীতের স্বৈরশাসনামলে রাজনৈতিক বিরোধী, ভিন্নমতালম্বী এবং দুর্বল জনগোষ্ঠীর ওপর দমন-পীড়নের মাধ্যমে নির্যাতনের যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল, তা বন্ধে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

বুধবার (২৫ জুন) দেওয়া ওই বাণীতে ড. ইউনূস অভিযোগ করেন, “শেখ হাসিনার শাসনামলে আইনের অপব্যবহার করে মানুষকে হয়রানি ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এতে শুধু আইনের শাসনই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, রাজনীতি ও সমাজের একটি অংশও বিষাক্ত হয়ে উঠেছে।”
তিনি বলেন, “মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন মানব মর্যাদার পরিপন্থী এবং কোনো ন্যায়ভিত্তিক সমাজে তা গ্রহণযোগ্য নয়।”

প্রধান উপদেষ্টা জানান, সরকারের মূল তিনটি লক্ষ্য হচ্ছে— অতীতের নির্যাতনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিচারের আওতায় আনা, কাঠামোগত সংস্কার এবং একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন।
“সরকার গঠনের পর থেকেই আমরা নির্যাতনের ধারা মোকাবিলা, জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা এবং ন্যায়ের ভিত্তিতে রাষ্ট্র গঠনে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছি,” বলেন তিনি।

ড. ইউনূস আরও জানান, সরকার ‘গুম প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সনদে’ স্বাক্ষর করেছে। এর মাধ্যমে গুম বা বেআইনি আটকসহ যেকোনো ধরনের রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন রোধে জাতীয় পর্যায়ে আইন প্রণয়নের কার্যক্রম চলছে।
তিনি বলেন, “একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে, যা অতীতের গুম ও নির্যাতনের ঘটনাগুলোর নিরপেক্ষ তদন্ত করবে এবং দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে যথাযথ সুপারিশ দেবে।”

পুলিশ ও বিচার বিভাগ সংস্কারের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা জানান, সংশ্লিষ্ট বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে এবং হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে আচরণ বিষয়ে বিচার বিভাগীয় নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি বাধ্যতামূলক প্রতিবেদন ও ঘটনার নথিভুক্তকরণ ব্যবস্থা চালু হয়েছে।

বাণীর শেষে ড. ইউনূস বলেন, “নির্যাতন প্রতিরোধের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপন আমাদের লক্ষ্য। এই দিবস হোক পরিবর্তনের একটি মোড়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *