
তেহরান, ২১ জুন ২০২৫
চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা প্রদানকারী দেশগুলোকে সরাসরি আগ্রাসনে জড়িত বলে ঘোষণা করেছে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান কার্যালয় ‘খাতাম আল-আম্বিয়া কেন্দ্রীয় সদর দফতর’ (KCHQ)। শনিবার (২১ জুন) এক বিবৃতিতে এই হুঁশিয়ারি দেয় সংস্থাটি। খবর দিয়েছে ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ।
বিবৃতিতে জানানো হয়, বিশ্বের অন্যতম উন্নত ও ব্যয়বহুল বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল ইরানের পাল্টা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। এতে দেশটি তাদের রাডার ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতার বড় একটি অংশ হারিয়েছে এবং গোলাবারুদ ও অস্ত্রের ঘাটতিতে পড়েছে।
এছাড়াও উল্লেখ করা হয়, ইসরায়েল যে কোনও ধরনের সামরিক সহায়তা—চাই তা আকাশপথে হোক বা সমুদ্রপথে—যে দেশ বা রাষ্ট্র সরবরাহ করবে, তাকে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত পক্ষ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। ফলে সেই দেশও ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর বৈধ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে।
উল্লেখ্য, ১৩ জুন ইসরায়েল সরাসরি ইরানের সামরিক, পারমাণবিক ও আবাসিক স্থাপনাগুলিতে বিমান হামলা চালায়। এতে নিহত হন ৪০০ জনেরও বেশি, যাদের মধ্যে রয়েছেন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিক।
এর জবাবে ইরান শুরু করে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ ৩’। এখন পর্যন্ত দেশটি ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনায় ১৮টি পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
সর্বশেষ পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে এ হামলার দাবি করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে খুশি হয়ে প্রশংসা করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরেই এ নিয়ে দেখা দিয়েছে তীব্র বিতর্ক। অনেক রাজনীতিবিদ ও সাধারণ নাগরিক এ সিদ্ধান্তের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন। ‘নো মোর ওয়ার’—শান্তির পক্ষে এমন স্লোগান উঠেছে দেশটির বিভিন্ন শহরে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি অংশগ্রহণ এবং ইরানের হুঁশিয়ারি—এ দুই মিলে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এখন নজর, ইরান এই হুমকি কতটা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করে এবং আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া কী হয়।