যুবদল নেতাকর্মীদের পাথর মেরে মানুষ হত্যার ভিডিও ভাইরাল

রাজধানীর চকবাজারে চাঁদা না দেয়ায় পাথর দিয়ে পিটিয়ে উলঙ্গ করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে এক তরুণকে। নিহত সোহাগের বন্ধু মামুন জানান, অভিযুক্ত মঈন গত দুই-তিন মাস ধরে প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে আসছিল সোহাগের কাছে। কিন্তু সোহাগ তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে দুই মাস আগে দোকানের সামনে এসে হুমকি দেয়—”তোকে দেখে নেব।” সেই হুমকিই বাস্তবে রূপ নেয় গত বুধবার সন্ধ্যায়, যখন সোহাগকে একা পেয়ে মঈন ও তার ৪-৫ সহযোগী প্রকাশ্যে পাথর দিয়ে আঘাত করে এবং উলঙ্গ করে নির্মমভাবে মারধর করে। ঘটনাস্থলেই মারা যান সোহাগ।

সোহাগের বন্ধুরা জানায়, ভয়ে তারা কেউ সামনে এগিয়ে যেতে পারেনি, কারণ মঈনের রয়েছে রাজনৈতিক পরিচয়। তিনি চকবাজার থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলেন। মঈনের বিরুদ্ধে রয়েছে মিটফোর্ড হাসপাতালের ফুটপাত ব্যবসায়ী ও কেমিক্যাল ব্যবসায়ী সংগঠকদের কাছ থেকে চাঁদা তোলার অভিযোগ। এমনকি হাসপাতালের কর্মচারী নিয়োগে মোটা অঙ্কের বিনিময়ে সুপারিশ করে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। তবে দলীয় পর্যায়ে তাকে সক্রিয় ও দুর্দিনের কর্মী হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। লালবাগ থানার ছাত্রদলের সদস্য সচিব রাব্বি বলেন, “মঈন আমাদের একজন ভরসার রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি এমন অপরাধে জড়াতে পারেন—এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে।”

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে, যাদের মধ্যে ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তারা বর্তমানে রিমান্ডে আছে। পুলিশের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও হত্যাকাণ্ড নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, রাজনৈতিক পরিচয়কে ঢাল বানিয়ে এলাকায় ভয় ও চাঁদাবাজির রাজত্ব কায়েম করেছে কিছু অসাধু ব্যক্তি। তারা দ্রুত অপরাধীদের কঠোর শাস্তি এবং রাজনীতির নামে অপরাধ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *