বিয়ের চাপে অতিষ্ঠ! ক্ষোভে নিজেই নিজের পুরুষাঙ্গ কেটে ফেললেন যুবক

পাবনার বেড়া উপজেলায় এক হৃদয়বিদারক ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। মাত্র ২২ বছর বয়সী এক যুবক—নাজমুল হোসেন—পরিবারের পক্ষ থেকে বিয়ের জন্য চাপ সহ্য করতে না পেরে নিজের পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলেছেন। পাবনা জেনারেল হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় যেমন চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, তেমনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে নানা প্রতিক্রিয়া।

ঘটনাটি ঘটে গত ২৬ জুন (বুধবার) পাবনার বেড়া উপজেলার কৈটোলা ইউনিয়নের মানিকনগর গ্রামে। নাজমুল হোসেন স্থানীয় মিন্টু মোল্লার ছেলে এবং পেশায় একজন এস্কেভেটর চালক। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, পরিবার থেকে দীর্ঘদিন ধরেই নাজমুলকে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। তার বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেলেও দুই ছোট বোন অবিবাহিত। ফলে পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে বিয়ের জন্য বলা হচ্ছিল যেন বোনদের বিয়েতেও সামাজিক প্রতিবন্ধকতা না থাকে। তবে নাজমুল বিয়েতে একেবারেই অনিচ্ছুক ছিলেন। ঘটনার দিন দুপুরে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তিনি বাজার থেকে একটি ব্লেড কিনে আনেন এবং ঘরে গিয়ে বাথরুমে নিজেই নিজের গোপনাঙ্গ কেটে ফেলেন।

চিৎকার শুনে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর নাজমুলকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে তিনি বর্তমানে চিকিৎসাধীন।

ঘটনার বিষয়ে কৈটোলা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, “ঘটনাটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। তার পরিবার প্রথমে ঢাকায় নিয়ে গেলেও পুলিশ কেস হওয়ার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে ভর্তি করানো সম্ভব হয়নি। পরে চিকিৎসা শুরু হয়। এখন সে পাবনায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।”

অন্যদিকে, নাজমুলের বাবা মিন্টু মোল্লা দাবি করেন, “আমার ছেলে মানসিকভাবে অসুস্থ। অনেকদিন ধরে তার চিকিৎসা চলছে। যদিও সে এখন কিছুটা সুস্থ, কিন্তু হঠাৎ করে এমন কাজ করবে তা ভাবিনি। আমরা তো স্বাভাবিকভাবেই চাইছিলাম ও বিয়ে করে সংসার করুক।”

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. জাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, “নাজমুলের অস্ত্রপচার ঢাকা মেডিকেলে সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে সে শঙ্কামুক্ত, তবে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।”

এ ঘটনার পর মানসিক স্বাস্থ্য, পারিবারিক চাপ ও বিয়ের সামাজিক অনুশাসন নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, পারিবারিক সিদ্ধান্ত জোর করে চাপিয়ে না দিয়ে সন্তানের মতামত ও মানসিক অবস্থা বোঝার প্রয়োজন রয়েছে। অন্যথায় এমন মর্মান্তিক ঘটনা বারবারই ঘটবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *