
রাজশাহী, ৩০ মে ২০২৫ — ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আহত এক বাংলাদেশি নাগরিক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টা ৩০ মিনিটে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। নিহত ব্যক্তি নাসির উদ্দিন (৪০), ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ মে রাতে শ্যামকুড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ঘাট সীমান্ত এলাকা দিয়ে কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিক অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। এ সময় বিএসএফ সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে নাসির উদ্দিন গুরুতর আহত হন। পরিবারের সদস্যরা তাকে গোপনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ১৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
নাসিরের সঙ্গে থাকা আরও দুই ব্যক্তি—পদ্মপুকুর গ্রামের বর্ডার রিপন ও অনন্তপুর গ্রামের সোহাগ—গুলিবর্ষণের সময় পালানোর চেষ্টা করলে আহত হন। তারা গোপনে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন বলে জানা গেছে।
মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, “১৩ দিন আগে বিএসএফের গুলিতে আহত হন নাসির। গতকাল রাতে তিনি মারা যান। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।”
ঘটনার বিষয়ে মহেশপুর সীমান্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত ৫৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিকুল আলম বলেন, “আমরা বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে বিজিবি সদস্য পাঠিয়েছি। তবে এখনো পরিবার থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। সীমান্তে ১৭ তারিখে একটি ঘটনা ঘটেছিল, সেটি আমরা খতিয়ে দেখছি।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, এর আগে গত এপ্রিল মাসে একই সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের গুলিতে আরও দুই বাংলাদেশি নিহত হন। ১১ এপ্রিল বাঘাডাঙ্গা গ্রামের ওয়াসিম এবং ২৭ এপ্রিল গোপালপুর গ্রামের ওবাইদুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। তাদের মরদেহ এখনো দেশে ফেরত আসেনি।
সীমান্তে বারবার বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনায় স্থানীয়ভাবে চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো সীমান্তে প্রাণঘাতী সহিংসতা বন্ধে দুই দেশের সরকারের মধ্যে দ্রুত কূটনৈতিক আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে।