দেবিদ্বারে আওয়ামী সমর্থককে আটকের পর বিএনপি পরিচয়ে ছেড়ে দিল পুলিশ

কুমিল্লার দেবিদ্বারে বদিউল আলম বদু (৫০) নামের এক আওয়ামী লীগ সমর্থককে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আটকের পর বিএনপি নেতা পরিচয়ে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে আওয়ামী লীগ পরিচয়ে আটক করা হলেও শনিবার সকালে ফটোসেশনের পর তাকে বিএনপি নেতা হিসেবে মুক্তি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় এলাকায় ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দিবাগত রাতে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দেবিদ্বার থানার পুলিশ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। এ সময় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের পাঁচ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে দেবিদ্বার পৌর এলাকার দক্ষিণ ভিংলাবাড়ি গ্রামের মৃত সোনা মিয়ার ছেলে বদিউল আলম বদু ছিলেন। তবে শনিবার সকালে চারজনকে কারাগারে পাঠানো হলেও বদিউল আলমকে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অনুরোধে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এর আগে বদিউল আলমকে মুক্ত করতে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ভিপি মহিউদ্দিন সরকার মাহফুজের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন বিএনপি নেতাকর্মী থানায় অবস্থান নেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, বদিউল আলম বদু স্বৈরাচার সরকারের আমল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে একাধিক সভা-সমাবেশে তার উপস্থিতি দেখা গেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ২৪ সালের ৪ আগস্ট নিউমার্কেট এলাকায় ছাত্র-জনতার ওপর আওয়ামী সমর্থকদের হামলায় অংশ নেওয়ার অভিযোগে বদুর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরছে। তার ছেলে জামির হোসেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুর রাজ্জাক রুবেল হত্যা মামলার আসামি। স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর বদু নিজেকে বিএনপি নেতা হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ভিপি মহিউদ্দিন সরকার মাহফুজ বলেন,

“বদিউল আলম বদু দেবিদ্বার পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। সে আগে আওয়ামী লীগ করত কি না, তা আমাদের জানা নেই। গত জানুয়ারিতে প্রকাশ্যে স্কুল মাঠে অনুষ্ঠান করে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে—তখন কেউ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেনি। তবে বদুর ছেলে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, এটা সত্য।”

দেবিদ্বার থানার ওসি মোহাম্মদ ইয়াছিন বলেন,

“বদিউল আলম বদু চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঘোষিত বিএনপি ওয়ার্ড কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ২৪ সালের ৪ আগস্ট দেবিদ্বারে ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তার একটি ছবি পাওয়া গেছে, তবে তিনি কোন পক্ষের হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তা নিশ্চিত নই। তার ছেলে হত্যামামলার আসামি—তাই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *