‘টাকা পাঠালে আধা ঘণ্টার মধ্যে ফেরত দেব’— ছেলেকে পেতে টাকা পাঠালেন ঠিকই, কিন্তু…

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ৫ বছর বয়সী নিখোঁজ শিশুকে মুক্তিপণের বিনিময়ে ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও, চারদিন পর তার লাশ উদ্ধার হয়েছে বাড়ির পাশের একটি জঙ্গলের পুকুর পাড় থেকে। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার দিঘীরপাড় এলাকায় স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ শিশুটির গলিত ও দ্বি-খণ্ডিত দেহ উদ্ধার করে। নিহত শিশুর নাম আইমান সাদাব। সে প্রবাসী আল আমিনের একমাত্র সন্তান এবং মা সুমাইয়া আক্তারের সঙ্গে গফরগাঁওয়ের দিঘীরপাড় গ্রামে নানার বাড়িতে থাকতো। সাদাব গত শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে নিখোঁজ হলে, তার নানা সুলতান মিয়া পাগলা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর, ১২ জুলাই দুপুরে দুইটি ফোন নম্বর থেকে ৩০ হাজার ও ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। দুটি নম্বরে ২০ হাজার এবং ৮ হাজার টাকা পাঠিয়েও সাদাবের কোনো খোঁজ মেলেনি। পরিবারের দাবি, প্রতারকরা বলেছিল— “ছেলে ভালো আছে, আধা ঘণ্টার মধ্যে ফেরত দিয়া যাব।” কিন্তু নির্ধারিত সময়ের পর গফরগাঁও রেলস্টেশনে অপেক্ষা করলেও কেউ এসে পৌঁছেনি এবং ওই ফোন নমরগুলো বন্ধ পাওয়া যায়। চারদিন ধরে খুঁজেও কোনো খোঁজ না পাওয়ার পর মঙ্গলবার সকালে প্রতিবেশীর মাধ্যমে তার মরদেহের খোঁজ পাওয়া যায়। গরু চড়াতে যাওয়া এক ব্যক্তি লাশটি প্রথম দেখতে পায় এবং বিষয়টি জানায় পরিবারকে।

ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি নেয়। পাগলা থানার ওসি মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম জানান, “এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।” একই ইউনিয়নে এর আগেও এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে—১১ জুলাই নিখোঁজ হয় সৌদি প্রবাসী নূর ইসলামের ১১ বছর বয়সী ছেলে সিফাত, যার লাশ একদিন পর বাড়ির পাশেই একটি পুকুরে পাওয়া যায়। বারবার এমন ঘটনা ঘটে যাওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে, এবং শিশু হত্যার বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠেছে সর্বত্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *