
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. সিরাজুল ইসলাম সিরাজের বিরুদ্ধে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার প্রলোভনে একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তোলপাড় শুরু হয়েছে। প্রতারণার শিকারদের অভিযোগ, সিরাজুল লাখ লাখ টাকা নিয়েও প্রতিশ্রুতি পূরণ করেননি এবং ফেরত চাইলে নানা অজুহাত দেন। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে যখন এক ভুক্তভোগী ও স্থানীয় নেতাদের কথোপকথনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা ও জেলা জামায়াতের সিনিয়র নেতারা হস্তক্ষেপ করে আংশিক টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করলেও এ নিয়ে দলীয় মহলে তীব্র সমালোচনা চলছে।
অভিযোগে বলা হয়, সিরাজুল একাধিক প্রার্থীর কাছে এক লাখ থেকে শুরু করে ১৭ লাখ টাকা পর্যন্ত দাবি করেন এবং বিভিন্ন সময় নগদ ও ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন হয়। এ ঘটনার একটি ৩ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের ভিডিও ফুটেজে তাকে টাকা লেনদেন ও প্রতিশ্রুতির কথা স্বীকার করতে শোনা যায়। এছাড়া, মফিজল হক নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা অভিযোগ করেন, সিরাজুল ২০-২৫ জনকে নিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালায় এবং তার ছেলেকে অপহরণের চেষ্টা করে, যা স্থানীয়দের সহায়তায় ব্যর্থ হয়। দলীয় নেতাদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক নিবন্ধন ও সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে সিরাজুল বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন, যা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।
যদিও এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন সিরাজুল ইসলাম সিরাজ। তার দাবি, শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাশ করানোর অনুরোধে তিনি অভিযোগকারীদের কান্তনগর এলাকার জহুরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিলেন মাত্র, নিজে টাকা নেননি। তিনি আরও বলেন, সরকারি চাকরির নামে প্রায় ১৭ লাখ টাকা আদায় করেছে দমোদরপুরের মোস্তফা নামের একজন, আর এই ঘটনার সঙ্গে তাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য জড়ানো হচ্ছে। এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মো. রোকনুজ্জামান রোকন জানিয়েছেন, তিনটি লিখিত অভিযোগের তদন্তে কমিটি গঠন করা হবে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের শাস্তি দেওয়া হবে।