
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের উত্তপ্ত হচ্ছে শিক্ষক রাজনীতি। জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানবিরোধী অবস্থানের অভিযোগ তুলে আওয়ামীপন্থী নীল দলের তৎকালীন শিক্ষক ও শিক্ষক সমিতির সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সাত দিনের আলটিমেটাম দিয়েছে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এক জরুরি বৈঠকে অংশ নিয়ে শতাধিক শিক্ষক এই দাবি তোলেন। তারা বলেন, যদি এই সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে তারা সাধারণ শিক্ষকদের সাথে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।
সাদা দলের দাবিগুলোর মধ্যে ছিল—জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া চিহ্নিত নীল দলের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা করে আইনের আওতায় আনা, তাদের সাময়িক বরখাস্ত, এবং জসীমউদ্দীন হল ও অমর একুশে হলের প্রভোস্টদের অপসারণ। একইসাথে, বিগত প্রশাসনের আমলে নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্তদের কোনো ধরনের স্থায়ীকরণ, পদোন্নতি বা প্রশাসনিক সুবিধা না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিনকে ‘ফ্যাসিস্টদের উৎসাহদাতা’ আখ্যা দিয়ে তার অপসারণ দাবি করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এ ধরনের দাবিদাওয়া ঢাবির প্রশাসনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সাদা দলের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক রাজনৈতিক স্বার্থে শিক্ষাঙ্গনকে বিভক্ত ও ফ্যাসিবাদের আশ্রয়ে পরিচালনা করছেন। অন্যদিকে নীল দলের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া না গেলেও ক্যাম্পাসে পাল্টা প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। শিক্ষক রাজনীতির এই উত্তেজনা যদি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না আনা যায়, তবে শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।