
ঢাবি প্রতিবেদক ▎
গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বৈষম্যবিরোধী চেতনার আলোকে যৌন নিপীড়ন ও হয়রানির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এই লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) যৌন নিপীড়ন সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় তদন্ত কমিটি পুনর্গঠনসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
নতুন করে গঠিত যৌন নিপীড়নবিরোধী কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. উপমা কবির। কমিটিতে অন্যান্য সদস্য হিসেবে রয়েছেন অ্যাডভোকেট সালমা আলী, অধ্যাপক ড. মির্জা তাসলিমা সুলতানা (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান, অধ্যাপক ডালিয়া পারভীন ও অধ্যাপক ড. উম্মে বুশরা ফাতেমা সুলতানা।
এর পাশাপাশি যৌন হয়রানি, বুলিং ও র্যাগিং প্রতিরোধে প্রচলিত নীতিমালা পর্যালোচনার জন্য প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশার নেতৃত্বে একটি পরামর্শক কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরীন, অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন, অধ্যাপক ড. আয়েশা বানু এবং আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. ইকরামুল হক।
গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ:
১. বুলিং ও র্যাগিং প্রতিরোধে আলাদা কমিটি
আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুদার আহ্বায়কত্বে পাঁচ সদস্যের একটি বুলিং ও র্যাগিং প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
২. প্রতিটি ইউনিটে কমিটি গঠন
সব অনুষদ, হল, হোস্টেল ও ইনস্টিটিউটে পৃথক বুলিং ও র্যাগিং প্রতিরোধ কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যেখানে অন্তত দুইজন নারী সদস্য থাকতে হবে।
৩. তথ্যানুসন্ধান কমিটি বাতিল
অভিযোগকারী, বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের বারবার জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হওয়া প্রতিরোধে তথ্যানুসন্ধান কমিটি আর গঠন করা হবে না।
৪. অভিযোগ তদন্তে স্বাধীনতা
বিভাগ/ইনস্টিটিউট/হলভিত্তিক কমিটিগুলো যৌন হয়রানি সংক্রান্ত অভিযোগ নিজেরা তদন্ত করতে পারবে অথবা কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠাতে পারবে।
৫. অভিযোগ বক্স স্থাপন
প্রতিটি একাডেমিক ভবন, হল ও হোস্টেলে অভিযোগ বক্স স্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যা তদারকি করবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
৬. শিক্ষক প্রশিক্ষণে বাধ্যতামূলক সেশন
নতুন শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন বিরোধী সেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
৭. সচেতনতামূলক আলোচনা
বছরে অন্তত একবার প্রতিটি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে যৌন হয়রানি, বুলিং ও র্যাগিং প্রতিরোধে আলোচনা সভা আয়োজনের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতির প্রতিশ্রুতি
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সকল অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউট পরিচালক, হলের প্রভোস্ট এবং ওয়ার্ডেনদের যৌন হয়রানি, নিপীড়ন, বুলিং, র্যাগিং ও স্টকিং-এর বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতি গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা একটি নিরাপদ, সম্মানজনক ও বৈষম্যহীন শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সকলের অংশগ্রহণে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে।