
ঢাকা, ২৩ মে ২০২৫ — আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকার নির্দিষ্ট সময়সীমা দিলেও তা রোডম্যাপ আকারে জাতির সামনে উপস্থাপন না করায় উদ্বেগ জানিয়েছে বিএনপি। দলটি জানিয়েছে, রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে তারা সাংগঠনিক প্রস্তুতি থাকলেও এই মুহূর্তে আন্দোলনে যেতে চায় না। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব।
বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনকালীন সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা এবং নির্বাচন ঘিরে একটি স্বচ্ছ রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে শুধুমাত্র ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে জুন ২০২৬ সালের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়সীমা উল্লেখ করে বিষয়টি স্থবির করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ দলটির।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “নির্বাচনের প্রসঙ্গ এলেই সরকার বিএনপিকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করায়। অথচ ভোট তো জনগণের অধিকার, আর সেই অধিকার হরণ করার যেকোনো ষড়যন্ত্র জনগণ মেনে নেবে না।”
আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম বলেন, “সরকার বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না, তাদের পছন্দের দল এনসিপি। এই দলকে শক্তিশালী করতে বর্তমান সরকার নির্বাচনের ঘোষণা পেছাচ্ছে এবং ‘কিংস পার্টি’ গড়ে তুলছে।”
দলটির নেতারা আরও বলেন, জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে রোডম্যাপের দাবিকে শুধু বিএনপির রাজনৈতিক এজেন্ডা হিসেবে না দেখে তা সার্বজনীন দাবি হিসেবে গ্রহণ করা উচিত। তারা অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার ‘একচোখা নীতি’ অনুসরণ করে এই দাবি এড়িয়ে যাচ্ছে।
যদিও আন্দোলনে এখনই নামার পরিকল্পনা নেই, তবে প্রয়োজন হলে রাজপথে নামার ইঙ্গিত দিয়েছেন নেতারা। “একটা অস্থিরতা তৈরি হলে তা কাজে লাগিয়ে আবারও কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হতে পারে,” বলেন হাফিজ উদ্দিন আহমদ। “তবে আমরা আরও কিছুদিন অপেক্ষা করবো, সরকার রোডম্যাপ ঘোষণা করে কি না।”
অন্যদিকে, কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে সংগঠনকে শক্তিশালী করে তুলেছে বিএনপি। দলের রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, “ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিয়মিত দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। আমরা নির্বাচনের জন্য যেমন প্রস্তুত, তেমনি আন্দোলনের জন্যও প্রস্তুত।”
দলটির নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সরকার দেরি করছে বলেই রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়ছে। তারা আশা প্রকাশ করেন, সরকার দ্রুত সময়ের গুরুত্ব অনুধাবন করে একটি নির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।