
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় সম্পদের বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা—এমন অভিযোগের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, এতে তিনি দণ্ডবিধি লঙ্ঘন করেছেন এবং এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ এখনো বিদ্যমান। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি গত ২২ মে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব বরাবর পাঠানো হয়, যেখানে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়।
ইসির ব্যাখ্যা অনুযায়ী, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ অনুযায়ী প্রার্থীদের হলফনামা যাচাই করার দায়িত্ব কমিশনের থাকলেও, সেটির নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পর মিথ্যা তথ্যের বিষয়টি সামনে আসে। ফলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সরাসরি ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়। তবে ইসি স্পষ্ট করে জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী দণ্ডবিধির ১৮১ ধারার আওতায় স্পষ্টতই অপরাধ করেছেন, কারণ তিনি ম্যাজিস্ট্রেট বা নোটারী পাবলিকের নিকট ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা ঘোষণা দিয়েছেন। এমন ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট অথবা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করে মামলা করতে পারেন।
এ বিষয়ে এখনো শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন এক সময়ে এই বিষয়টি সামনে এসেছে যখন দেশজুড়ে নির্বাচন কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যদিও আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার এখতিয়ার এখন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক ও বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের হাতে, তবুও এটি রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের আলোচনার জন্ম দিয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, বিষয়টি যদি আদালতে গড়ায়, তাহলে তা বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।