
নতুন সংবিধান, ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং আধুনিক প্রতিরক্ষা কাঠামো গঠনের অঙ্গীকার করে ২৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রোববার (৩ আগস্ট) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক সমাবেশে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এই ইশতেহার ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “এক বছর আগে এই শহীদ মিনার থেকেই শপথ নিয়েছিলাম– দেশকে স্বৈরাচার থেকে মুক্ত করব। আজ আবারও আহ্বান জানাই, আসুন নতুন বাংলাদেশ গড়ি, আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক বাস্তবায়ন করি।”
ইশতেহারে উল্লেখযোগ্যভাবে নতুন সংবিধান প্রণয়ন, পরিবারতন্ত্র বিলোপ, ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনীতি, এবং জুলাই অভ্যুত্থানকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার দাবির পাশাপাশি পরাজিত শক্তির বিচারের কথা বলা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কার, গণতান্ত্রিক কাঠামোর পুনর্গঠন, মানবাধিকাররক্ষা ও র্যাব বিলুপ্তির প্রতিশ্রুতি এবং নাগরিকদের হয়রানি ঠেকাতে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকার ওপর সুস্পষ্ট নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকাকে জনবান্ধব করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
জাতীয় নাগরিক পার্টি তাদের প্রতিরক্ষা কাঠামোর রূপরেখায় জানিয়েছে, তারা অত্যাধুনিক সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেম এবং UAV ব্রিগেড গঠন করবে। প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় নন-নিউক্লিয়ার সেকেন্ড স্ট্রাইক সক্ষমতা অর্জনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলা হয়, একটি স্বনির্ভর ও আধুনিক বাহিনী গড়ে তুলতে হবে। এছাড়াও সমুদ্রে সাবমেরিনভিত্তিক ত্রিমাত্রিক শক্তিশালী নৌবাহিনী গঠনের অঙ্গীকার করা হয়।
নারীর নিরাপত্তা, গ্রাম পার্লামেন্ট ও স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণ, তারুণ্যের কর্মসংস্থান, স্বাধীন গণমাধ্যম এবং দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনের জন্য সুস্পষ্ট রূপরেখাও উঠে এসেছে ঘোষণাপত্রে। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন, উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ এবং মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
এনসিপি নেতারা জানিয়েছেন, তাদের লক্ষ্য কেবল শাসন পরিবর্তন নয়—রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক রূপান্তরের মাধ্যমে একটি ন্যায়ভিত্তিক, সমানাধিকারের বাংলাদেশ গঠন করা।