রাতের ভোটের আইডিয়া ছিল তৎকালীন আইজিপির

২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্স পূরণের পরিকল্পনার সূত্রপাত হয়েছিল তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মো. জাবেদ পাটোয়ারীর মাথা থেকে—এমন চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন পুলিশের আরেক সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। গত মার্চ মাসে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে দেয়া এক জবানবন্দিতে তিনি আরও দাবি করেন, সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনায় ডিসি, ইউএনও, এসিল্যান্ড এবং পুলিশসহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা রাতের ভোট ‘বাস্তবায়নে’ যুক্ত ছিলেন।


সাবেক র‍্যাব ডিজি মামুন তার জবানবন্দিতে আরও জানান, গুম, নির্যাতন ও ক্রসফায়ারের মতো ‘গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত’ আসতো সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও সামরিক উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিকীর কাছ থেকে। এসব বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখত বিভিন্ন বাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। রাজনৈতিক আনুগত্য ও মাঠ পর্যায়ে ‘সাফল্যের’ জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের বিপিএম, পিপিএম পদক দেওয়া হতো। মামুন বলেন, ব্যারিস্টার আরমানকে দীর্ঘদিন গুম করে রাখা হয়েছিল র‍্যাবের টিএফআই সেলে—যার বিষয়ে তাকে পরে অবহিত করেছিলেন তৎকালীন আইজিপি বেনজীর আহমেদ, কিন্তু তিনি চাইলেও কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেননি।


তিনি আরও অভিযোগ করেন, ঢাকায় কর্মরত অধিকাংশ পুলিশ কর্মকর্তার ছিলেন গোপালগঞ্জের বাসিন্দা, যারা ঊর্ধ্বতনদের কথায় চলতেন না। মনিরুল ইসলাম (তৎকালীন এডিশনাল আইজিপি) এবং হাবিবুর রহমান (ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার) নিজেদের মতো করে পুরো বাহিনী চালাতেন এবং নিজেদের মধ্যেও ছিল গ্রুপিং ও দ্বন্দ্ব। মামুনের এসব তথ্য সামনে আসার পর রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা। উল্লেখ্য, গত ১০ জুলাই তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *