
ঢাকা, ২৬ মে ২০২৫:
দেশজুড়ে চলমান আন্দোলন ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গুঞ্জন চলছে, তিনি নিজেও পদত্যাগের চিন্তা করছেন। যদিও অর্ধঘণ্টার আলোচনার পরেও সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থানে দৃশ্যমান কোনও পরিবর্তন দেখা যায়নি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আলোচনার মাধ্যমে সরকার সাময়িকভাবে কিছুটা স্বস্তি পেলেও এটি দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর হবে না যদি না সরকার নিজেকে আরও জবাবদিহির আওতায় আনে এবং ত্রুটিগুলো দূর করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাসনিম সিরাজ মাহবুব বলেন, “কিছুদিন হয়তো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে, কিন্তু বিতর্কিত উপদেষ্টাদের সরানো না হলে এবং নির্বাচনের একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না দিলে সংকট থেকে মুক্তি মিলবে না।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান মনে করেন, সরকারের উচিত দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা। তিনি বলেন, “অন্যথায় সন্দেহ ও অসহযোগিতা আরও গভীর হবে।”
৫ আগস্টের ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি বলেও জানান বিশেষজ্ঞরা। কয়েকজন উপদেষ্টার প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থার সংকট এবং কিছু মন্ত্রণালয়ে দৃশ্যমান অগ্রগতির অভাব পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এস এম আলী রেজা বলেন, “সব দাবি রাজনৈতিক দলের কৌশলগত। সরকারকে দরকার সেগুলোকে বিশ্লেষণ করে যৌক্তিক দাবিগুলোর প্রতি সাড়া দেওয়া।”
সরকার সংস্কারের কথা বললেও, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের অভাব স্পষ্ট। এক্ষেত্রে উভয় পক্ষকে ছাড় দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
তাসনিম সিরাজ মাহবুব বলেন, “রাজনৈতিক স্বার্থে আঘাত লাগলেই দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। কিছু শর্ত নিয়ে দলগুলো চুপ থাকছে, আবার কিছু শর্তে চরম আপত্তি করছে।”
অধ্যাপক এস এম আলী রেজা মনে করেন, সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত দায়িত্ব ভাগ করে নেয়া। তিনি বলেন, “যত বেশি পথ খোলা রাখবেন, মনোযোগ তত বিভক্ত হবে। তাই সুস্পষ্ট পরিকল্পনা দরকার।”
বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান সরকার গণঅভ্যুত্থানের ফসল হলেও যদি ব্যর্থ হয়, তার দায়ভার পড়বে সবার ওপরেই। তাই সংকট সমাধানে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপের আহ্বান জানান তারা।