যেভাবে হ/ত্যা করা হলো ছাত্রদল নেতা জুবায়েদকে…

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জোবায়েদ হোসেনকে হত্যা করতে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের আগানগর থেকে ৫০০ টাকায় একটি সুইস গিয়ার ছুরি কিনে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন প্রধান আসামী মাহির রহমান। জোবায়েদ টিউশনিতে কখন যায় কখন আসে তার খবরাখবর জানাতেন বর্ষা। জোবায়েদকে খুন করতে একাধিকবার পরিকল্পনা করেন বর্ষা ও মাহির।আজ মঙ্গলবার পুলিশের করা আসামী বার্জিস শাবনাম বর্ষা (১৯) এর জবানবন্দি লিপিবদ্ধের আবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। জবানবন্দি গ্রহনের জন্য আবেদন করেন বংশাল থানার উপ-পরিদর্শক মো.আশরাফ হোসেন।

আবেদন থেকে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আসামী বার্জিস শাবনাম বর্ষা (১৯) এবং তার বয়ফ্রেন্ড মাহির রহমান (১৯) প্রায় দেড় বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন। জোবায়েদ বর্ষাকে প্রায় এক বছর টিউশন করাতেন, এ সময়ে বর্ষার সঙ্গে জোবায়েদের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এতে মাহির ও বর্ষার মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। ঘটনার প্রায় এক মাস আগে মাহির জানতে পারেন যে বর্ষার সঙ্গে জোবায়েদের প্রেমের সম্পর্ক আছে। মাহির বিষয়টি মেনে নিতে পারছিলেন না এবং বর্ষার প্ররোচনায় মাহির জোবায়েদের হত্যা করার পরিকল্পনা করেন। বর্ষা নিয়মিত জোবায়েদের টিউশনের সময়সূচি মাহিরকে জানাতেন।এতে বলা হয়, ১৯ অক্টোবর ২০২৫ বিকেল আনুমানিক ৪:৩০টায় জোবায়েদ বর্ষার বাসায় রৌশন ভিলায় টিউশনে যান। মাহির ও তার বন্ধু ফারদীন আহমেদ আয়লান বাসার নিচতলা সিঁড়ির কাছে জোবায়েদকে ঘিরে ধরে। বর্ষার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে তর্কের সময় মাহির তার ব্যাগ থেকে ছুরি বের করে জোবায়েদের গলার ডান পাশে আঘাত করে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেন। এ সময় বর্ষা তৃতীয় তলায় দাঁড়িয়ে ঘটনাটি দেখছিলেন।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের জবানবন্দি ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক নেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীর বিবৃতি হত্যার সঙ্গে আসামিদের সরাসরি সম্পৃক্ততা প্রমাণ করছে। মামলার অন্যান্য পলাতক আসামীদের সনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এদিন বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. জোবায়েদ হোসাইনের হত্যার মামলায় অভিযুক্ত তিন আসামী জড়িত আসামিদের আদালতে উঠানো হয়। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে দায় স্বীকার করেছেন আসামীরা। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান, জুয়েল রানা এবং মাসুম মিয়া তাদের বিবৃতি নেন। রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী ওমর ফারুক ফারুকি তথ্যটি নিশ্চিত করেন। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন জুবায়েদের ছাত্রী বারজিস শবনম বর্ষা (১৯), তার বয়ফ্রেন্ড মো. মাহির রহমান (১৯), ফারদিন আহমেদ আয়লান (২০) এবং আরও চার থেকে পাঁচজন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি।

পিপি জানান, অভিযুক্তরা হত্যাকাণ্ডে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন, এবং তাদের বন্ধু প্রীতম চন্দ্র দাস আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। বিবৃতি দেওয়ার পর তারা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।  মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী ইস্তিয়াক হোসেন জিপু বলেন, অভিযুক্তরা ধারা ১৬৪ অনুযায়ী স্বীকারোক্তিমূলক বিবৃতি দিয়েছেন। আদালত এখন তাদের বিবৃতির ভিত্তিতে আদেশ দিতে পারে। “ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করার জন্য সমস্ত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মামলাটি পরিচালনা করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *