যমুনা রেলসেতুর পিলারে চুলাকৃতির ফাটল!

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে যমুনা রেলসেতুর পিলারে চুলাকৃতি ফাটলের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। ছবিগুলো দেখেই নির্মাণ কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করছেন অনেকেই। তবে যমুনা রেলসেতু প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি ফাটল নয়, বরং প্রচণ্ড গরমের কারণে সৃষ্ট হেয়ারক্র্যাক বা চুলাকৃতি ফাঁকা।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকালে যমুনা রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের সহকারী প্রধান প্রকৌশলী নাইমুল হক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ‘যমুনা রেলসেতুর পশ্চিম প্রান্তের আট-দশটি পিলারের নিচের অংশে কিছু জায়গায় চুলাকৃতি ফাঁকা বা হেয়ারক্র্যাক দেখা গেছে। ঘষে রেজিন বা আঠার প্রলেপ দিয়ে মেরামতের প্রক্রিয়া চলছে।’

নাইমুল হক আরও বলেন, ‘এটি কোনো নির্মাণ ত্রুটি নয়, এবং সেতুর অবকাঠামোর জন্য ক্ষতিকরও নয়। মূলত প্রচণ্ড গরম বা বৈরী আবহাওয়ায় পিলারে শূন্য দশমিক এক থেকে তিন মিলিমিটার পর্যন্ত ক্ষুদ্র আকৃতির চুলাকৃতি ফাঁকা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ট্রেন চলাচলে কোনো প্রভাব পড়বে না। কিছু ফেসবুক পেজে চুলাকৃতি ফাঁকা স্থানগুলোকে আরও বড় দেখিয়ে পোস্ট করা হয়েছে, যা জনমনে অযথা আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।’

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে একাধিক ফেসবুক পেজে যমুনা রেলসেতুর পিলারের ফাটলের ছবি ছড়িয়ে পড়ে।

যমুনা রেলসেতুটি দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর চলতি বছরের ১৮ মার্চ পূর্ব ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন এলাকায় পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন করা হয়। এতে রেলপথের সম্ভাবনাময় অগ্রযাত্রার নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়। সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা, যার ৭২.৪ শতাংশ ঋণ হিসেবে দিয়েছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) এবং বাকি অর্থ দিয়েছে সরকার। সেতু নির্মাণ করেছে জাপানের ওটিজি এবং আইএইচআই যৌথভাবে।

এর আগে ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরে ২০২১ সালের মার্চে পিলার নির্মাণের জন্য পাইলিং কাজ শুরু হয়। ৪.৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রেলসেতু দেশের দীর্ঘতম এবং প্রথম ডাবল ট্র্যাকের ডুয়েল গেজের সেতু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *