ভোট সামনে রেখে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের যে বার্তা দিচ্ছে বিএনপি

সামনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ভোটের আগে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছে বিএনপি। ঢাকায় ডেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে যারা এবার বঞ্চিত হবেন, তাদের নানাভাবে মূল্যায়নের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। তবে এসব বৈঠক থেকে এখনও কাউকেই চূড়ান্ত সবুজ সংকেত দেয়নি দল। বিএনপি নেতাদের ভাষ্য, বিশৃঙ্খলা এড়াতেই এবার আগেভাগে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগেই ভোটের আমেজে সরগরম বিএনপির কর্মী ও সমর্থকরা। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকার চলাকালে চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ের সামনে জড়ো হচ্ছেন উৎসুক নেতাকর্মীরা— এমনই চিত্র দেখা গেছে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে।

রোববার (২৬ অক্টোবর) চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, রংপুর, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর বিভাগের ১১৪টি আসনের অন্তত সাড়ে তিন শতাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশীর সঙ্গে দুই ধাপে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন তারেক রহমান। সোমবারের বৈঠকে রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও ঢাকা বিভাগের প্রার্থীরা অংশ নেন।

বৈঠকের শুরুতে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা দলের সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। তবে তারেক রহমান ছিলেন তুলনামূলক অভিভাবকসুলভ ভূমিকায়— তিনি দল ও দেশের বাস্তবতা তুলে ধরে ঐক্যের বার্তা দেন।

মনোনয়নপ্রত্যাশীরা দলের নীতিনির্ধারকদের বক্তব্য শোনেন, তবে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পাননি। তারা প্রতিশ্রুতি দেন, ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থেকে মিত্রদের জন্য আসন সমঝোতা হলে তা মেনে নেবেন।

কেন তফসিল ঘোষণার আগেই এ সাক্ষাৎকার প্রক্রিয়া— এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, “২০১৮ সালের পর থেকে বিএনপি নির্বাচনের বাইরে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে, যা জনগণের মনে ভুল ধারণা তৈরি করেছে। তাই এবার আমরা আগে থেকেই ভোটের মাঠে নামতে চাই, যাতে প্রচারণা শুরু করা যায়।”

তিনি আরও বলেন, “আগে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়ে কাঙ্ক্ষিত ফল মেলেনি। এবার প্রতিটি আসনে একজন প্রার্থীকেই সবুজ সংকেত দেওয়া হবে।”

তবে বিএনপিতে ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ ঠেকানো কতটা সম্ভব হবে— তা নিয়ে এখনো শঙ্কায় রয়েছেন দলের অনেক নেতা-কর্মী। ২০০৬ সালের অক্টোবরের পর থেকে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি ২০০৮ সালের নবম নির্বাচনে পরাজিত হয়, দশম ও দ্বাদশ নির্বাচন বয়কট করে এবং একাদশ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখে পড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *