
ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই (FT-7 BGI) মডেলের প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৯ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিকেরও বেশি মানুষ। সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টা ১৮ মিনিটের দিকে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। আকাশে মাত্র ১৩ মিনিট উড্ডয়ন করার পরই বিমানটি সরাসরি আছড়ে পড়ে স্কুল ভবনের উপর। সঙ্গে সঙ্গে দাউ দাউ করে আগুন ধরে যায়। মুহূর্তে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়।
ঘটনার সময় স্কুলের জুনিয়র সেকশনের ক্লাস চলছিল। ভবনটিতে তখন নার্সারি থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ১০০–১৫০ শিক্ষার্থী অবস্থান করছিল। বিকট শব্দে বিমানটি ভবনে ধাক্কা খেলে হাহাকার পড়ে যায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে। এরপর দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট, সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা। অগ্নিনির্বাপন ও উদ্ধার তৎপরতার পাশাপাশি আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। নিহতদের মধ্যে বার্ন ইনস্টিটিউটে ২ জন, সিএমএইচে ১১ জন, কুর্মিটোলা হাসপাতালে ২ জন, লুবনা জেনারেল হাসপাতাল ও উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪ জন মারা গেছেন।
ঘটনার পর সরকার মঙ্গলবার (২২ জুলাই) একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। এই দিনে দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। একই সঙ্গে দেশের মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিমান বাহিনী দুর্ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত এবং আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও সহায়তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এই মর্মান্তিক ঘটনা পুরো জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছে—আছে শোক, ক্ষোভ আর অনিশ্চয়তা।