
‘জুলাই গণহত্যা’ মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়ার সূচনা বক্তব্যে রাষ্ট্রপক্ষ চরম ভাষায় তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। রোববার (৩ আগস্ট) সকালে ট্রাইব্যুনালে সূচনা বক্তব্য শুরুর আগে সাংবাদিকদের সামনে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে বিগত সরকার দেশজুড়ে গুম, খুন, চাঁদাবাজি ও টাকার পাচারের এক ভয়াবহ রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি করেছিল।” তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “রাষ্ট্রপক্ষ শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি চায়। ব্যক্তি নয়, অপরাধই আমাদের কাছে মুখ্য।”
অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, “শেখ হাসিনা পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় স্বৈরাচার ও শ্রেষ্ঠ মিথ্যাবাদী স্বৈরশাসক। যদি স্বৈরশাসকদের নিয়ে আন্তর্জাতিক সমিতি গঠন করা হয়, তবে শেখ হাসিনা হবেন তার সভাপতি। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি গুম-খুনমুক্ত, গণতান্ত্রিক সমাজ উপহার দিতে হলে এ ধরনের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কঠোর বিচার অপরিহার্য।” তিনি যোগ করেন, “এই বিচার যেন কোনো ক্যাঙ্গারু কোর্টে না হয়, বরং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনেই চলুক। এটি মানব সভ্যতার ইতিহাসে একটি নজির স্থাপন করবে।”
এদিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, “শেখ হাসিনার বিচার কোনো প্রতিশোধ নয়, বরং এটি বিচার ব্যবস্থায় জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপনের একটি পথ।” তিনি আশ্বস্ত করেন, “জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনেই মামলাটি পরিচালিত হবে।” একইদিনে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আনা হয় মামলার ‘রাজসাক্ষী’ সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে। পাশাপাশি ট্রাইব্যুনালে বক্তব্য দেন জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থনে আহত বেশ কয়েকজন ব্যক্তি, যাঁদের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে নিরাপত্তার কারণে সরাসরি সম্প্রচার ছাড়াই।