দুদকের চা খাওয়ার বিল এক লাখ টাকা দাবি: এনসিপি নেতার অভিযোগ, দুদকের তদন্ত শুরু

ঢাকা, ২৬ জুন — দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘চা খাওয়ার’ নামে এক লাখ টাকা ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন এনসিপি (ন্যাশনাল কনসেনসাস পার্টি)-এর দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই অভিযোগ করেন।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে হাসনাত দাবি করেন, এনসিপির কেন্দ্রীয় নেত্রী ডা. মাহমুদা মিতুর কাছ থেকে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ না থাকা সত্ত্বেও তাকে ‘ক্লিয়ারেন্স’ দেওয়ার কথা বলে মোবাইলে এক লাখ টাকা ঘুষ দাবি করা হয়। তিনি বলেন, নিজেকে দুদকের মহাপরিচালক (ডিজি) পরিচয় দিয়ে আক্তার হোসেন নামে এক ব্যক্তি ও তার সহযোগী এই টাকা দাবি করেন।

এই অভিযোগ দুদকের দৃষ্টিগোচর হলে সংস্থার মহাপরিচালক আক্তার হোসেন জানান, বিষয়টি একটি প্রতারক চক্রের কাজ হতে পারে। তিনি বলেন, “মাহমুদা মিতু প্রতারণার শিকার হয়েছেন। একই মোবাইল নম্বর থেকে টাকা চাওয়ার ঘটনায় চারটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি এবং অনুসন্ধান শুরু করেছি।”

দুদক মহাপরিচালক আরও বলেন, “এই প্রতারক চক্রের সঙ্গে যদি কোনো দুদক কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তবে এনসিপি নেতা হাসনাতের দাবি আরও বিস্তৃত। তিনি বলেন, “দুদকের ‘সর্বনিম্ন রেট’ হচ্ছে এক লাখ টাকা। ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানালে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়। এমনকি বলা হয়, ‘আপনি ডাক্তার, আপনার তো টাকার অভাব নেই।’”

তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে এখন নিরীহ মানুষের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করা হচ্ছে। কিছু না করেও যদি একজনের কাছ থেকে এক লাখ টাকা দাবি করা হয়, তাহলে যাদের বিরুদ্ধে প্রকৃত অভিযোগ আছে, তাদের কাছ থেকে কত টাকা নেওয়া হয়েছে?”

ফেসবুক পোস্টে হাসনাত দাবি করেন, “দুদক অতীতেও বিরোধী দলের নেতাদের টার্গেট করেছে। আমরা ভেবেছিলাম, নতুন বাংলাদেশে পরিবর্তন আসবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, দুদক আগের মতোই আছে। চায়ের নামে টাকা দাবি এখন নতুন নিয়মে পরিণত হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “মাহমুদা মিতু সাহস করে ঘুষ না দিয়ে ভিডিও প্রমাণ রেখে দিয়েছেন। কিন্তু দেশের বহু মানুষ এভাবে প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছে।”

হাসনাতের বক্তব্য অনুযায়ী, “আমরা চাই, যদি কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ থাকে, তাহলে মামলা হোক, বিচার হোক। কিন্তু চাঁদাবাজি কেন হবে? আমলাতন্ত্রের বিষদাঁত যদি এখনই না ভাঙা যায়, তাহলে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে।”

দুদক এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি, তবে অনুসন্ধানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সংস্থার একাধিক কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *