
চলতি অর্থবছরের প্রথম একনেক সভায় ৮ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হলেও জুলাই আন্দোলনে শহীদ পরিবারগুলোর জন্য প্রস্তাবিত ফ্ল্যাট প্রকল্পটি অনুমোদন পায়নি।
রোববার (২৭ জুলাই) সকালে রাজধানীর এনইসি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সভা শেষে ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ জানান, প্রকল্পটি অনুমোদনের আগে খরচের যৌক্তিকতা মূল্যায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ সভায় ‘৩৬ জুলাই আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ’ প্রকল্প উত্থাপন করে। যদিও প্রকল্পটির উদ্দেশ্য সাধুবাদ পায়, তবে প্রশ্ন তোলা হয়— কেন কেবল ঢাকাতেই আবাসন প্রকল্প, যেখানে আন্দোলনকারী ও শহীদ পরিবার ছিল সারা দেশে?
পরিকল্পনা উপদেষ্টা জানান, প্রকল্পটির দায়িত্ব মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে বিষয়টি এগিয়ে নেয়।
✅ অনুমোদিত উল্লেখযোগ্য প্রকল্পসমূহ:
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প:
ব্যয়: ২ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা।
অন্তর্ভুক্ত: শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য হল ও আবাসিক ভবন, একাডেমিক ভবন নির্মাণ। - ২ হাজার কোটি টাকার স্যানিটেশন প্রকল্প:
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের স্যানিটেশন ব্যবস্থা প্রতিবেশী দেশ ভারতের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে।”
❗ র্যাপিড বাস প্রকল্পে দুর্নীতির ইঙ্গিত
গাজীপুর থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত র্যাপিড বাস ট্রানজিট (BRT) প্রকল্পকে সভায় “বড় ধরণের অপরিকল্পিত প্রকল্প” হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা জানান, বিপুল ব্যয়ের এই প্রকল্পের নকশা, পরিকল্পনা ও দায়ী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু করা হবে।
🕵️ বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পে ঠিকাদার পলায়ন তদন্তে
সরকার পরিবর্তনের পর অনেক প্রকল্পের ঠিকাদার পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও তদন্তের আওতায় আনা হচ্ছে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা জানান, এসব প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক এবং সরকারি কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়েও তদন্ত হবে।
সারসংক্ষেপ:
- জুলাই শহীদদের জন্য ফ্ল্যাট প্রকল্প অনুমোদন পায়নি
- ১২টি প্রকল্পে ব্যয় ৮১৪৯ কোটি টাকা
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন ও স্যানিটেশন প্রকল্পে বড় বরাদ্দ
- BRT প্রকল্প ও পালিয়ে যাওয়া ঠিকাদারদের বিষয়ে তদন্ত শুরু
এই একনেক সভা সরকার গঠনের পর প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রকল্প মূল্যায়নের প্রতিচ্ছবি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যেখানে ভবিষ্যৎ উন্নয়ন কর্মকাণ্ড আরও যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে পরিচালনার বার্তা স্পষ্ট।