
পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সামনে ঘটে যাওয়া নৃশংস হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। গত বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে শতাধিক মানুষের সামনে পিটিয়ে ও পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই ভয়াবহ হত্যার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সৃষ্টি হয় তোলপাড়। নিহতের বোন কোতোয়ালী থানায় অপু দাসসহ ১৯ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতোমধ্যে এজাহারভুক্ত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের একজন, পুরান ঢাকার চকবাজার থানা ছাত্রদলের সদস্য সচিব অপু দাসকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। শুক্রবার (১১ জুলাই) ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। এতে বলা হয়, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে অপু দাসকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল সাংগঠনিক পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির অনুমোদন করেছেন। তারা দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তার সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশ দিয়েছেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে দেখা গেছে বিভ্রান্তি। বিজ্ঞপ্তিটি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করার পর ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম পরে তা মুছে ফেলেন এবং গণমাধ্যমকে বলেন, “বহিষ্কারের কোনো ঘটনা ঘটেনি।” যদিও নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের এক সহ-সভাপতি বহিষ্কারের খবর নিশ্চিত করেছেন। একইসঙ্গে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান রিংকু বহিষ্কারের বিজ্ঞপ্তিটি শেয়ার করে লিখেছেন, “সত্য চিরকালই সুন্দর, তার চেয়েও বেশি সুন্দর ন্যায় বিচার।” তিনি প্রশাসনের কাছে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। ছাত্রদলের অভ্যন্তরে বিভ্রান্তি থাকলেও, জনমনে একটাই প্রশ্ন—এই নৃশংস হত্যার সঠিক বিচার আদৌ কি হবে?