
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “কাগজে লেখা জুলাই সনদে আমরা বিশ্বাসী নই। এর বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা পেলেই কেবল স্বাক্ষর করা হবে।”
তিনি আরও জানান, সনদ বাস্তবায়নে সাংবিধানিক আদেশ জারি করার প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেওয়া হয়েছে। সরকারপ্রধান হিসেবে তিনিই এটি জারি করবেন, কোনোভাবেই রাষ্ট্রপতি তা করতে পারবেন না।
বুধবার (২২ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, “সনদে নোট অব ডিসেন্ট কার্যকর হবে না; পুরো সনদই গণভোটে যাবে। এরপর নতুন সংসদ নতুন সংবিধান প্রণয়ন করবে। সনদে স্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত সরকারের অবস্থানের ওপর নির্ভর করছে।”
প্রশাসনে পরিবর্তন প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, “ডিসি–এসপি নিয়োগে বড় দলগুলো নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করছে। এমনকি উপদেষ্টা পরিষদের কিছু সদস্যও এতে সহযোগিতা করছেন। যেসব উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।”
নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে না। তারা কোনো দলের পক্ষে কাজ করছে, আবার কোনো দলের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করছে। কমিশনের বর্তমান আচরণ সাংবিধানিক নয়; তাই এর পুনর্গঠন প্রয়োজন।”
দলের প্রতীক বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, “শাপলা প্রতীক না দেওয়ার আইনি ও সাংবিধানিক ব্যাখ্যা পাওয়ার পরই বিকল্প প্রতীকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। এই ব্যাখ্যা ছাড়াই শাপলা প্রতীক না দিলে কমিশনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে বিএনপির অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ‘জুলাই সরকার’-এর আওতাধীন। এ নিয়ে কমিশনে আলোচনা হয়েছে, এবং গণভোটের পরেই বিষয়টি চূড়ান্ত করা সম্ভব। তাই এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের কথা বলা দূরভিসন্ধিমূলক।”
দুই ছাত্র উপদেষ্টার বিষয়ে তিনি বলেন, “তারা কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি নন; অভ্যুত্থান আন্দোলনের প্রতিনিধি হিসেবেই তারা উপদেষ্টা পরিষদে আছেন। যদি তাদের দলীয় প্রতিনিধি ধরা হয়, তবে অন্য উপদেষ্টাদের রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ডও বিবেচনায় নিতে হবে।”
অন্যদিকে, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারজিস আলম জানান, বিসিএস নন-ক্যাডার নিয়োগে ‘বিশেষ সংশোধন বিধিমালা–২০২৫’ বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টার স্বাক্ষর ও গেজেট প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, এটি তার টেবিলে পৌঁছেছে এবং আগামী সপ্তাহের মধ্যেই অনুমোদন পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।