একাত্তর নিয়ে বক্তব্যের পর দুঃখ প্রকাশ করলেন আসিফ নজরুল

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের বিচার দাবিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেছিলেন, “শেখ হাসিনা ও তার দোসররা যে অপরাধ বাংলাদেশে করেছে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও সম্ভবত এত জঘন্য অপরাধ করেনি।” এ বক্তব্য সামাজিকমাধ্যমে প্রচণ্ড বিতর্ক সৃষ্টি করে, যেখানে অনেকেই মন্তব্যটিকে একাত্তরের গনহত্যাকে খাটো করার চেষ্টা বলে মনে করেন।

তীব্র প্রতিক্রিয়ার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দুঃখ প্রকাশ করে একটি ব্যাখ্যামূলক পোস্ট দেন আসিফ নজরুল। তিনি লেখেন, “শেখ হাসিনার নৃশংসতার সঙ্গে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতার তুলনা করা ঠিক হয়নি আমার। দুটোই জঘন্যতম অপরাধ, কিন্তু তুলনাটি ছিল অনুচিত।” তবে একইসঙ্গে তিনি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আকারে লেখেন, “লাশ ও আহত মানুষকে আগুনে পোড়ানো, নারী-কিশোর-শিশুদের হত্যা, হেলিকপ্টার দিয়ে গুলি করে বেসামরিক মানুষ হত্যা এবং হাসপাতালে চিকিৎসা না দিয়ে হত্যার নির্দেশদাতা ছিলেন তিনি।” এসব কর্মকাণ্ডকে তিনি যুদ্ধকালীন অপরাধের সমতুল্য বলে আখ্যা দেন।

সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতিক্রিয়া নিয়ে আইন উপদেষ্টা আরও লেখেন, “আমার কথায় কেউ যদি মনে করে থাকেন যে আমি একাত্তরের পাকিস্তানি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞকে খাটো করে দেখেছি—তাহলে আমি তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি।” তিনি স্পষ্ট করেন, তার মূল উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে দায় ও জবাবদিহি তুলে ধরা, কিন্তু উপমা নির্বাচনে অসাবধানতা ঘটেছে। রাজনৈতিক মহলে কেউ কেউ এটিকে কৌশলগত ক্ষতি নিয়ন্ত্রণ হিসেবে দেখলেও, অনেকেই বলছেন—আসিফ নজরুলের মন্তব্য আবারও প্রমাণ করল, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি জাতীয় রাজনীতিতে কতটা সংবেদনশীল ও বিস্ফোরক হয়ে উঠেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *