
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. আরিফুজ্জামান আরিফের পালানোর পথ থেমে গেল ভারতের সীমান্তে। বহু হত্যা ও হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি এই পুলিশ কর্মকর্তাকে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) আটক করেছে। সাতক্ষীরার কাকডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে পালানোর সময় তাকে উত্তর চব্বিশ পরগনার বসিরহাট মহকুমার হাকিমপুর চেকপোস্টে গ্রেফতার করা হয়। বিএসএফ জানায়, তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর বর্তমানে তাকে স্বরূপনগর থানায় রাখা হয়েছে। তবে তাকে কীভাবে বাংলাদেশে ফেরত আনা হবে, তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট সিদ্ধান্ত আসেনি।
নীলফামারীর বাসিন্দা আরিফুজ্জামান গত বছর থেকে পলাতক ছিলেন। তাকে প্রথমে রংপুর থেকে বদলি করা হয় ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায়, এরপর কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। শুধু তাই নয়, তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। এছাড়াও রংপুরের বিভিন্ন থানায় একাধিক হত্যা ও হত্যা চেষ্টা মামলায় তার নাম রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ ও গুলি চালান, যাতে অন্তত তিনজন নিহত হন এবং অনেকেই আহত হন।
পুলিশ কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, আরিফুজ্জামান ছিলেন আন্দোলন দমনের সময় সবচেয়ে আগ্রাসী মুখ। ১৬ জুলাইয়ের ঘটনার দিন তিনি সরাসরি নির্দেশ দেন এবং নিজেও গুলি চালান বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডের মামলায় অভিযুক্তদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে কৌশলে হলফনামা নেন তিনি। বর্তমানে তাকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক যোগাযোগ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ ইতোমধ্যেই তার বিরুদ্ধে থাকা মামলার নথি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতে পাঠিয়েছে।