
ওয়াশিংটন, ২৪ মে ২০২৫ — যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) থেকে আমদানিকৃত সকল পণ্যের ওপর ৫০% শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। এছাড়া, আইফোনসহ অ্যাপলের পণ্য যদি যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত না হয়, তবে তাতেও ২৫% শুল্ক আরোপ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্প শুক্রবার (২৩ মে) নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে এসব ঘোষণা দেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতি না থাকায় ক্ষুব্ধ ট্রাম্প
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইইউ’র সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনায় কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি না হওয়াতেই ট্রাম্প এই কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। ইইউ পারস্পরিক শুল্ক হ্রাসের পক্ষে থাকলেও, ট্রাম্প বেশিরভাগ আমদানির ওপর কমপক্ষে ১০% শুল্ক বজায় রাখতে চান।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের বাণিজ্য মিত্র ইইউ’র সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে পারে। অর্থনীতিবিদ মার্সেল ফ্র্যাটশার মন্তব্য করেছেন, “ট্রাম্পের এই হুমকি যুক্তিহীন। ইইউ’র ওপর চীনের চেয়েও বেশি শুল্ক আরোপ করার অর্থ হলো বাণিজ্য নীতিতে চরম অসামঞ্জস্যতা।”
বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা
বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এই ঘোষণার ফলে ইইউ, চীন ও অন্যান্য দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে অবস্থান নিতে পারে। এতে করে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন চীনের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে কিছুটা নমনীয়তা দেখালেও ইইউ’র ক্ষেত্রে হঠাৎ করে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। চীনের ওপর শুল্ক ৩০% নামিয়ে আনা হলেও, ইইউ’র সব পণ্যের ওপর ৫০% শুল্ক আরোপ আগামী মাস থেকেই কার্যকর হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প।
অ্যাপলকেও চাপে ফেলার চেষ্টা
শুধু আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নয়, অভ্যন্তরীণ শিল্পনীতিতেও চাপ সৃষ্টি করছেন ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, অ্যাপল যদি যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে উৎপাদন না করে, তাহলে তাদের পণ্যের ওপর ২৫% শুল্ক আরোপ করা হবে। এ ঘোষণাকে দেশীয় উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বাড়ানোর চাপ হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা।
সমালোচনা ও উদ্বেগ
ট্রাম্পের এসব ঘোষণায় দেশ-বিদেশে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে এটিকে নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে দেখলেও, অর্থনৈতিক মহলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে সম্ভাব্য বাণিজ্য যুদ্ধ ও বাজারে অস্থিরতা নিয়ে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে আসন্ন মাসগুলোতে নাটকীয় পরিবর্তন আসতে পারে।