
দীর্ঘ সাত দশকের কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ভারত এখনো যুক্তরাষ্ট্রের শতভাগ মিত্রে পরিণত হতে পারেনি—এমনই মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করার পর বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রুবিও বলেন, “ভারত আমাদের বন্ধু হলেও, অনেক নীতিগত কারণে সেই বন্ধুত্ব এখনো পূর্ণ মাত্রায় বিকশিত হয়নি।” তিনি জানান, একদিকে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রক্ষার চেষ্টা চলছে, অন্যদিকে রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় জ্বালানি কেনার ঘটনায় মার্কিন প্রশাসনের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
রুবিও বলেন, “ভারত যেমন একটি বড় বাজার, তেমনি তাদের জ্বালানির চাহিদাও অন্য অনেক দেশের তুলনায় বেশি। ভারতের আন্তর্জাতিক বাজারে প্রচলিত মূল্যে জ্বালানি কেনার সক্ষমতা থাকলেও তারা বারবার রাশিয়ার দিকেই ঝুঁকে যাচ্ছে।” মার্কিন প্রশাসনের অভিযোগ, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে দেশটি তেল বিক্রি করছে তুলনামূলক কম দামে, যা ভারত লুফে নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, সেই সস্তা তেলকে পরিশোধন করে আন্তর্জাতিক বাজারে তুলনামূলক বেশি দামে বিক্রি করে আবার লাভবান হচ্ছে। এই পুরো প্রক্রিয়াকে যুক্তরাষ্ট্র ‘নৈতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ’ এবং ‘অমিত্রসুলভ’ বলে উল্লেখ করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই শুল্ক আরোপ ও কূটনৈতিক চাপ আসলে একটি বড় বার্তা—যুক্তরাষ্ট্র এখন চাইছে, ভারত কৌশলগতভাবে শুধু “বন্ধু” না থেকে, বরং পুরোপুরি মিত্র হয়ে উঠুক। তবে ভারতীয় নীতিনির্ধারকরা এই চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে কি না, তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। তবে এটুকু নিশ্চিত, রাশিয়ার জ্বালানি থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রভাব বিস্তার—সবক্ষেত্রেই ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এখন এক জটিল বাঁকে দাঁড়িয়ে।